অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা করে ৬টি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে দুদকের ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।
প্লট নেওয়া ৬ জন হলেন—সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজিব ওয়াজেদ (জয়), মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), ছোট বোন শেখ রেহানা, রেহানার ছেলে রেদোয়ান মুজিব সিদ্দিকী ববি এবং রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকী।
ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক বলেন, পূর্বাচলের প্লট অবৈধভাবে নিজেদের নামে করিয়ে নেওয়ায় হাসিনা-রেহানাসহ শেখ পরিবারের ৬ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।
দুদক জানায়, রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকারের ১৩/এ ধারার ক্ষমতাবলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ (জয়), মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), ছোট বোন শেখ রেহানা, রেহানার ছেলে রেদোয়ান মুজিব সিদ্দিকী ববি এবং রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকীর নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩নং রোড থেকে ১০ কাঠা করে মোট ৬০ কাঠার ৬টি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে তথ্য প্রকাশ হয়েছে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কমিশন থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২২ ডিসেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ওঠা ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। তারও আগে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা পরিবারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের টিম গঠন করে কমিশন। ওই দুটি অভিযোগ একই অনুসন্ধান টিম অনুসন্ধান করছে। তারা ইতোমধ্যে বিভিন্ন নথিপত্র সংগ্রহ করছে বলে জানা গেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিষয়ে একটি প্রাথমিক তদন্ত করে। ২০১৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বনাম রিজভী আহমেদ মামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নাম প্রথম নজরে আসে। এফবিআইয়ের তদন্তে সজীব ওয়াজেদ জয়ের গুরুতর আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়টি উন্মোচিত হয়। বিশেষ করে, তার নামে থাকা হংকং এবং কেম্যান আইল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব থেকে স্থানীয় একটি মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক এবং লন্ডনের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে টাকা পাচারের তথ্য উঠে আসে। এফবিআই তাদের লন্ডনের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এবং প্রমাণ পেয়েছে যে সেখানে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম এবং মানিলন্ডারিংয়ের অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের (ডিওজে) সিনিয়র ট্রায়াল এটর্নি লিন্ডা সেমুয়েলস স্পেশাল এজেন্ট লা প্রিভোটের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাদেশ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে জমা করা হয়েছে।