অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমি, বিমান ও পর্যটন উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফের মৃত্যুতে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করা হবে। সেদিন বাংলাদেশের সব সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের সই করা ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফের ইন্তেকালে আগামী সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করা হবে। সে জন্য ২৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সব সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, মরহুমের রুহের মাগফেরাতের জন্য একইদিন বাংলাদেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে তার আত্মার শান্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে সোমবার রাষ্ট্রীয় শোক
হাসান আরিফের মৃত্যুতে উপদেষ্টা পরিষদের শোক
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) মিরপুরে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হবে বলে পরিবারসূত্রে জানা গেছে। সবশেষ শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় সচিবালয়ে হাসান আরিফের তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা ও শ্রদ্ধা শেষে মরদেহ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) হিমগরে রাখা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার বিকেল ৩টায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে মারা যান উপদেষ্টা হাসান আরিফ। তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
হাসান আরিফ ১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ কলকাতা থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
কর্মজীবনে তিনি ১৯৬৭ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন। এরপর ঢাকায় এসে বাংলাদেশ হাইকোর্টে কাজ শুরু করেন।
হাসান আরিফ বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ভূমি এবং ধর্ম মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি অক্টোবর ২০০১ থেকে এপ্রিল ২০০৫ পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল পদে ছিলেন। এ ছাড়া তিনি জানুয়ারি ২০০৮ থেকে জানুয়ারি ২০০৯ পর্যন্ত বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন।
এএফ হাসান আরিফ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ, নির্মাণ সালিশ, বাণিজ্যিক সালিশ, অর্থ, ব্যাংকিং এবং সিকিউরিটিজ বিষয়, করপোরেট, বাণিজ্যিক ও ট্যাক্সেশন বিষয়, সাংবিধানিক আইন বিষয়, আরবিট্রেশন এবং বিকল্প বিরোধ সমাধানের অন্যান্য পদ্ধতি নিয়ে কাজ করেছেন।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন এএফ হাসান আরিফ।