3:32 pm, Sunday, 22 December 2024

মহান বিজয় দিবস আজ

  • Akram
  • Update Time : 11:32:27 am, Monday, 16 December 2024
  • 20

মহান বিজয় দিবস আজ

Monzu-Info-Tech
Monzu-Info-Tech

আজ ১৬ ডিসেম্বর, আমাদের গৌরবময় বিজয়ের দিন। এটি ৫৪তম মহান বিজয় দিবস, যে দিনটি বাঙালি জাতির জন্য চিরস্মরণীয়। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে মুক্তির অবারিত আকাশে উড়ার দিন এটি। হাজার বছরের সংগ্রাম, শৌর্য এবং বীরত্বের এক অনন্য সাক্ষী হয়ে আছে এই দিন, যা আমাদের ইতিহাসের গর্বময় অধ্যায়।

১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ছোবল থেকে মুক্ত হয়েছিল প্রিয় মাতৃভূমি। সমাপ্তি ঘটেছিল বাঙালির ওপর চালানো পাকিস্তানি হানাদারদের নৃশংস নিধনযজ্ঞ। ফলে এই দিনটি বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে স্বাধীন ভূখণ্ডের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার দিন।

দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা সংগ্রামের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছিল। আজকের দিনটিতে বিজয়ের উল্লাসে ভাসবে পুরো দেশ, আনন্দে উদ্বেলিত হবে পুরো জাতি। দেশের প্রতিটি প্রান্তে নানা আয়োজনে উদযাপন হবে মহান বিজয় দিবস।

বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন। দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তারা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন অগণিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদের আত্মত্যাগের কথা। যাদের মহান ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল চূড়ান্ত বিজয়।

যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপনে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আজ প্রত্যুষে ঢাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান উপদেষ্টা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজমের নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বিদেশি কূটনীতিক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের সদস্যসহ সর্বস্তরের মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। বিকেলে বঙ্গভবনে বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবারকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

সরকারি ছুটি আজ। সারাদেশে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উত্তোলন করা হবে লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা। গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনায় করা হবে বর্ণিল আলোকসজ্জা। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপ জাতীয় পতাকায় সাজানো হবে।

বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন সংবাদপত্র, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নানা আয়োজন করবে। ডাক বিভাগ এ উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হবে। এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, জেলখানা, সরকারি শিশু সদনসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে।

এই দিনে দেশের সব শিশু পার্ক ও জাদুঘর বিনা টিকিটে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে এবং সিনেমা হলে বিনামূল্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।

এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে।

এছাড়া দেশের সব জেলা ও উপজেলায় দিনব্যাপী আড়ম্বরপূর্ণ বিজয় মেলা (চারু, কারু ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত শিল্প পণ্যের) এবং শিশুদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরতে কর্মসূচি নেওয়া হবে।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছে।

Write Your Comment

About Author Information

Akram

কনক্রিট হল ব্লক- বাড়ির শক্ত ভিতের জন্য সেরা পছন্দ

মহান বিজয় দিবস আজ

Update Time : 11:32:27 am, Monday, 16 December 2024

আজ ১৬ ডিসেম্বর, আমাদের গৌরবময় বিজয়ের দিন। এটি ৫৪তম মহান বিজয় দিবস, যে দিনটি বাঙালি জাতির জন্য চিরস্মরণীয়। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে মুক্তির অবারিত আকাশে উড়ার দিন এটি। হাজার বছরের সংগ্রাম, শৌর্য এবং বীরত্বের এক অনন্য সাক্ষী হয়ে আছে এই দিন, যা আমাদের ইতিহাসের গর্বময় অধ্যায়।

১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ছোবল থেকে মুক্ত হয়েছিল প্রিয় মাতৃভূমি। সমাপ্তি ঘটেছিল বাঙালির ওপর চালানো পাকিস্তানি হানাদারদের নৃশংস নিধনযজ্ঞ। ফলে এই দিনটি বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে স্বাধীন ভূখণ্ডের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার দিন।

দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা সংগ্রামের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছিল। আজকের দিনটিতে বিজয়ের উল্লাসে ভাসবে পুরো দেশ, আনন্দে উদ্বেলিত হবে পুরো জাতি। দেশের প্রতিটি প্রান্তে নানা আয়োজনে উদযাপন হবে মহান বিজয় দিবস।

বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন। দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তারা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন অগণিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদের আত্মত্যাগের কথা। যাদের মহান ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল চূড়ান্ত বিজয়।

যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপনে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আজ প্রত্যুষে ঢাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান উপদেষ্টা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজমের নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বিদেশি কূটনীতিক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের সদস্যসহ সর্বস্তরের মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। বিকেলে বঙ্গভবনে বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবারকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

সরকারি ছুটি আজ। সারাদেশে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উত্তোলন করা হবে লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা। গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনায় করা হবে বর্ণিল আলোকসজ্জা। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপ জাতীয় পতাকায় সাজানো হবে।

বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন সংবাদপত্র, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নানা আয়োজন করবে। ডাক বিভাগ এ উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হবে। এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, জেলখানা, সরকারি শিশু সদনসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে।

এই দিনে দেশের সব শিশু পার্ক ও জাদুঘর বিনা টিকিটে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে এবং সিনেমা হলে বিনামূল্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।

এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে।

এছাড়া দেশের সব জেলা ও উপজেলায় দিনব্যাপী আড়ম্বরপূর্ণ বিজয় মেলা (চারু, কারু ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত শিল্প পণ্যের) এবং শিশুদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরতে কর্মসূচি নেওয়া হবে।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছে।