চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ঢাকায় জ্বালানি তেল সরবরাহ কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইনের নির্মাণকাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মার্চ থেকে এ লাইনে তেল পরিবহন শুরু হবে। এর ফলে বছরে সাশ্রয় হবে প্রায় ২৩৬ কোটি টাকা।
বর্তমানে চট্টগ্রাম থেকে নদী ও সড়কপথে ঢাকায় তেল পরিবহন করা হয়। এতে পরিবহন ব্যয় ছাড়াও তেল চুরি এবং সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার মতো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে নদীপথে নাব্যতার সংকট পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। পাইপলাইন স্থাপনের ফলে পরিবহন খরচ কমার পাশাপাশি তেল সরবরাহব্যবস্থা আরও নিরবচ্ছিন্ন হবে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সূত্রে জানা গেছে, দেশে বার্ষিক জ্বালানি তেলের গড় চাহিদা প্রায় ৬৫ লাখ টন। এর মধ্যে ঢাকায় ব্যবহৃত হয় মোট চাহিদার ৪০ শতাংশ। বর্তমানে এই তেল পরিবহন করতে প্রতি বছর প্রায় ২০০ কোটি টাকা খরচ হয়। পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিবহন শুরু হলে এ ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।
২০১৮ সালে অনুমোদিত এই প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ২,৮৬১ কোটি টাকা। পরবর্তী সময়ে তা সংশোধিত হয়ে দাঁড়ায় ৩,৬৯৯ কোটি টাকায়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।
বিপিসি জানায়, পাইপলাইন স্থাপনের ফলে পরিবহন ব্যয় বছরে ৩২৬ কোটি টাকা আয় করবে এবং পরিচালন, রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় হবে মাত্র ৯০ কোটি টাকা। ফলে প্রকল্পের বিনিয়োগ ১৬ বছরের মধ্যেই উঠে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিপিসির মনোনীত প্রকল্প পরিচালক মো. আমিনুল হক জানিয়েছেন, ডিসেম্বরে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর জানুয়ারিতে কমিশনিং প্রক্রিয়া শুরু হবে। জনবল নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ শেষে মার্চ থেকে পুরোপুরি জ্বালানি তেল পরিবহন শুরু হবে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ জ্বালানি পরিবহনে একটি নতুন মাইলফলক স্পর্শ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।