র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) বিলুপ্ত করতে সরকারের পুলিশ সংস্কার কমিশনের কাছে সুপারিশ করেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিএনপি গঠিত পুলিশ সংস্কার কমিটির প্রধান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, র্যাব অসংখ্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তাই আমরা অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত পুলিশ সংস্কার কমিশনের কাছে র্যাব বিলুপ্তির করার সুপারিশ করেছি।
তিনি বলেন, পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে থাকা র্যাব ইতোমধ্যে দেশে এবং বিদেশে ব্যাপকভাবে নিন্দিত ও সমালোচিত হয়েছে। দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠন, জাতিসংঘ, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এবং সুধীজন র্যাবকে দেশে সংঘটিত অধিকাংশ গুম, খুন, নির্যাতন ও নিপীড়নের জন্য দায়ী করেছে। বাহিনীটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছে। এই প্রেক্ষাপটে র্যাবকে বিলুপ্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। র্যাবের দায়িত্ব আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এবং থানা পুলিশ যেন পালন করতে পারে সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের পুলিশ সংস্কার কমিশন বিএনপির কাছে সুপারিশ না চাইলেও আমরা সুপারিশমালা দিয়েছি। রাষ্ট্রের এই অত্যাবশ্যকীয় সেবার (পুলিশ) সংস্কার এখন সময়ের দাবি।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ১৬ বছরে দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। যার মধ্যে পুলিশ বাহিনী অন্যতম। যারা বিতর্কিত হয়ে পড়েছেন, মর্যাদা বলতে কিছুই বাকি নেই সেইসব পুলিশ সদস্যদের। গুম-খুন-নির্যাতনের কারণে তাদের ওপরে আস্থা নেই জনগণের।
তিনি বলেন, পেশাদারিত্বের বাইরে গিয়ে মারমুখি, কখনও হিংস্র হয়ে উঠেছিল পুলিশ বিভাগ। জুলাই বিপ্লবে আন্দোলন দমনের নামে তারা সহাস্রাধিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। পুলিশ গণশত্রুতে পরিণত হওয়ার পরও এ বাহিনীকে ছেঁটে ফেলার সুযোগ নেই। তাদেরকে সংস্কার করতে হবে। নতুন করে গড়তে হবে। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে সুশৃঙ্খল ও জনবান্ধব পুলিশবাহিনী গড়ে তোলার সুপারিশ করেছি আমরা।
এর আগে পুলিশ প্রশাসন সংস্কারে প্রস্তাবনা তৈরি করতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি কমিটি করেছিল দলটি। ওই কমিটি পরে একাধিক বৈঠক ও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় করে এই প্রস্তাবনা তৈরি করেছে।
রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, জবাবদিহিমূলক ও দুর্নীতিমুক্ত পুলিশ বাহিনী গড়তে এবং মানবাধিকারের প্রতি আরও সচেতন করতে মোট ১৭ দফা সুপারিশ করেছে বিএনপি। এতে পুলিশের অযৌক্তিক বলপ্রয়োগ এবং নিষ্ঠুর আচরণের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণেরও প্রস্তাব করা হয়েছে।