9:34 pm, Sunday, 22 December 2024

নাটোরে বিএনপির জনসভা মঞ্চে পলকের শ্যালিকা, সমালোচনার ঝড়

  • Akram
  • Update Time : 12:52:44 pm, Saturday, 7 December 2024
  • 35

নাটোরে বিএনপির জনসভা মঞ্চে পলকের শ্যালিকা, সমালোচনার ঝড়

Monzu-Info-Tech
Monzu-Info-Tech

নাটোরের সিংড়া উপজেলা বিএনপির জনসভায় মঞ্চে বসে ছিলেন সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালিকা ও দীপ মেডিকেলের মালিক ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টি। তিনি সিংড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনুর ভাতিজি এবং পলকের স্ত্রী আরিফা জেসমিনের চাচাতো বোন।

ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিকালে নাটোরের সিংড়া উপজেলায় বিএনপির জনসভায়। এ নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। ফেসবুকজুড়ে বইছে সমালোচনার ঝড়।

জানা গেছে, ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টি সিংড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনুর ভাতিজি ও পলকের স্ত্রী আরিফা জেসমিনের চাচাতো বোন।

অনুষ্ঠানে থাকা কয়েকজন বিএনপির নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ফারজানা রহমান দৃষ্টি আওয়ামী লীগের শাসনামলে পলকের দাপটে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন ভাড়া নিয়ে ক্লিনিক পরিচালনা করেছেন। এ ছাড়া তিনি পলকের নির্বাচনের সময় প্রকাশ্যে নৌকার ভোট করেছেন। ‘জয় বাংলা’ অ্যাওয়ার্ডও নিয়েছেন পলকের প্রভাবে।

বিএনপির নেতাকর্মীরা বলেন, ‘সাধারণ কর্মীরা গত ১৫ বছর নির্যাতিত হলেও এই সুবিধাবাদী লোকজন সব সময় সুবিধায় থাকে। ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলকের চাচাশ্বশুর হওয়ায় সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলেন। তাই এখন আওয়ামী লীগের সুবিধাপ্রাপ্ত ফারজানাকে বিএনপির বানানোর চেষ্টা করছেন আনোয়ারুল ইসলাম আনু।’

এ ব্যাপারে ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টি বলেন, ‘আমি একজন চিকিৎসক। চিকিৎসার পাশাপাশি সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এসব কর্মকাণ্ডের কারণে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময় বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেয়েছি।’ সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য ‘জয় বাংলা’ অ্যাওয়ার্ডসহ বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন বলে দাবি তার।

বিষয়টি নিয়ে বিএনপির এক কর্মী তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘সিংড়া বিএনপির জনসভার মঞ্চে জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালিকা, তাহলে এরাই কি আগামী দিনের বিএনপি?’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিএনপির নেতাদের অভিযোগের বিষয়ে ফারজানা রহমান দৃষ্টি জানান, তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত না। শুক্রবার বিএনপির জনসভার জন্য বিকালে তিনি কোনও যানবাহন না পাওয়ায় সিংড়া বাসস্ট্যান্ডের ক্লিনিক থেকে হেঁটে হাসপাতালের পাশে তার চেম্বারে যাচ্ছিলেন। এ সময় তার পরিচিত কয়েকজন তাকে মঞ্চে ডাকলে কিছু সময় সেখানে ছিলেন।

সিংড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু বলেন, ‘তাকে (দৃষ্টি) কে মঞ্চে তুলেছে, সেটা আমি জানি না।’

ফারজানা রহমান দৃষ্টি বিগত দিনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণায় পলকের স্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছ থেকে ইয়ং বাংলার অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন। এ ছাড়াও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসের অ্যাওয়ার্ড ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন তাকে জয়িতা অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন।

শুক্রবার বিকালে সিংড়া উপজেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিংড়ার সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদ।

Write Your Comment

About Author Information

Akram

নাটোরে বিএনপির জনসভা মঞ্চে পলকের শ্যালিকা, সমালোচনার ঝড়

Update Time : 12:52:44 pm, Saturday, 7 December 2024

নাটোরের সিংড়া উপজেলা বিএনপির জনসভায় মঞ্চে বসে ছিলেন সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালিকা ও দীপ মেডিকেলের মালিক ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টি। তিনি সিংড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনুর ভাতিজি এবং পলকের স্ত্রী আরিফা জেসমিনের চাচাতো বোন।

ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিকালে নাটোরের সিংড়া উপজেলায় বিএনপির জনসভায়। এ নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। ফেসবুকজুড়ে বইছে সমালোচনার ঝড়।

জানা গেছে, ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টি সিংড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনুর ভাতিজি ও পলকের স্ত্রী আরিফা জেসমিনের চাচাতো বোন।

অনুষ্ঠানে থাকা কয়েকজন বিএনপির নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ফারজানা রহমান দৃষ্টি আওয়ামী লীগের শাসনামলে পলকের দাপটে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন ভাড়া নিয়ে ক্লিনিক পরিচালনা করেছেন। এ ছাড়া তিনি পলকের নির্বাচনের সময় প্রকাশ্যে নৌকার ভোট করেছেন। ‘জয় বাংলা’ অ্যাওয়ার্ডও নিয়েছেন পলকের প্রভাবে।

বিএনপির নেতাকর্মীরা বলেন, ‘সাধারণ কর্মীরা গত ১৫ বছর নির্যাতিত হলেও এই সুবিধাবাদী লোকজন সব সময় সুবিধায় থাকে। ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলকের চাচাশ্বশুর হওয়ায় সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলেন। তাই এখন আওয়ামী লীগের সুবিধাপ্রাপ্ত ফারজানাকে বিএনপির বানানোর চেষ্টা করছেন আনোয়ারুল ইসলাম আনু।’

এ ব্যাপারে ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টি বলেন, ‘আমি একজন চিকিৎসক। চিকিৎসার পাশাপাশি সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এসব কর্মকাণ্ডের কারণে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময় বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেয়েছি।’ সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য ‘জয় বাংলা’ অ্যাওয়ার্ডসহ বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন বলে দাবি তার।

বিষয়টি নিয়ে বিএনপির এক কর্মী তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘সিংড়া বিএনপির জনসভার মঞ্চে জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালিকা, তাহলে এরাই কি আগামী দিনের বিএনপি?’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিএনপির নেতাদের অভিযোগের বিষয়ে ফারজানা রহমান দৃষ্টি জানান, তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত না। শুক্রবার বিএনপির জনসভার জন্য বিকালে তিনি কোনও যানবাহন না পাওয়ায় সিংড়া বাসস্ট্যান্ডের ক্লিনিক থেকে হেঁটে হাসপাতালের পাশে তার চেম্বারে যাচ্ছিলেন। এ সময় তার পরিচিত কয়েকজন তাকে মঞ্চে ডাকলে কিছু সময় সেখানে ছিলেন।

সিংড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু বলেন, ‘তাকে (দৃষ্টি) কে মঞ্চে তুলেছে, সেটা আমি জানি না।’

ফারজানা রহমান দৃষ্টি বিগত দিনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণায় পলকের স্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছ থেকে ইয়ং বাংলার অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন। এ ছাড়াও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসের অ্যাওয়ার্ড ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন তাকে জয়িতা অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন।

শুক্রবার বিকালে সিংড়া উপজেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিংড়ার সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদ।