1:54 pm, Sunday, 22 December 2024

সামরিক আইন জারির জন্য ক্ষমা চাইলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট

  • Akram
  • Update Time : 10:23:14 am, Saturday, 7 December 2024
  • 29

সামরিক আইন জারির জন্য ক্ষমা চাইলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট

Monzu-Info-Tech
Monzu-Info-Tech

দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) আকস্মিকভাবেই দেশটিতে সামরিক আইন জারি করেন। তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেখানকার পার্লামেন্ট এর বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ায় সামরিক আইন প্রত্যাহারে বাধ্য হন ইউন। এনিয়ে দেশটিতে একপ্রকার রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়েছে।

সামরিক আইন জারি করার জন্য এবার ক্ষমা চেয়েছেন ইউন। তিনি বলেছেন, ভবিষ্যতে এমন কিছু আর করবেন না। গতকাল শুক্রবার টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে ইউন বলেছেন, আমি অনেক দুঃখিত। যারা মর্মাহত হয়েছেন তাদের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাচ্ছি।

এশিয়ার গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ কোরিয়ায় গত ৫০ বছরের মধ্যে গত মঙ্গলবার প্রথম মার্শাল ল বা সামরিক আইন জারি করা হলে তাতে হতবাক হন দেশটির মানুষ।

ইউন সুক ইওল সেদিন রাতে এক টেলিভিশন ঘোষণায় ‘রাষ্ট্র বিরোধী শক্তি’ এবং উত্তর কোরিয়ার হুমকির কথা উল্লেখ করে সামরিক আইন জারির ঘোষণা দিয়েছিলেন।

তবে এর কিছুক্ষণ পরই পরিষ্কার হয়ে যায় যে- কোনো বিদেশি হুমকি নয়, বরং তার নিজের রাজনৈতিক সংকটের কারণেই তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অবেশেষে সেই সিদ্ধান্তের জন্য ক্ষমা চাইলেন ইউন।

এদিকে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল যদি ক্ষমতায় থাকেন, তাহলে দক্ষিণ কোরীয়রা বড় ধরনের বিপদের মুখে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার শাসক দলের প্রধান। তিনি অবিলম্বে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

পিপলস পাওয়ার পার্টি (পিপিপি)-এর নেতা হান দুং-হুন শুক্রবার এক জরুরি বৈঠকে বলেছেন, তার দল বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পেয়েছে যে মঙ্গলবার রাতে সামরিক আইন জারি করার সময় প্রেসিডেন্ট ইউন গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদদের রাষ্ট্রবিরোধিতার অভিযোগে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এ ছাড়া টানা দুই দিনেরও বেশি সময় ধরে প্রেসিডেন্ট ইউনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা এই বিক্ষোভের বিষয়ে তদন্ত করছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইউনের অভিশংসন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান করে জনগণ পিপিপি’র আইনপ্রণেতাদেরকে হাজার হাজার বার্তা পাঠাচ্ছেন। দ্য চোসুন ডেইলি লিখেছে, সংসদ সদস্য শিন সাং-বুম ফেসবুকে চার হাজারের বেশি মেসেজ পেয়েছেন।

স্থানীয় জরিপকারী প্রতিষ্ঠান রিয়েলমিটারের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দশজনের মাঝে সাত জনের বেশি দক্ষিণ কোরীয় নাগরিক প্রেসিডেন্টের অভিশংসনের পক্ষে। অভিশংসন প্রস্তাব পাশ করতে ২০০ ভোট প্রয়োজন। বিরোধী দলের হাতে ১৯২টি আসন রয়েছে।

অর্থাৎ, প্রস্তাব পাস করার জন্য তাদের শাসক দল থেকে মাত্র আটজনের ভোট প্রয়োজন। এমনিতে শাসক দলের সংসদ সদস্যের সংখ্যা ১০৮ জন। সামরিক শাসন জারির চেষ্টা করার আগে থেকেই প্রেসিডেন্ট ইউন অজনপ্রিয়। দুর্নীতির অভিযোগ ও বিরোধী-নিয়ন্ত্রিত সংসদের কারণে কার্যত একপ্রকার অচলাবস্থার মধ্যে ছিলেন তিনি।

Write Your Comment

About Author Information

Akram

কনক্রিট হল ব্লক- বাড়ির শক্ত ভিতের জন্য সেরা পছন্দ

সামরিক আইন জারির জন্য ক্ষমা চাইলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট

Update Time : 10:23:14 am, Saturday, 7 December 2024

দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) আকস্মিকভাবেই দেশটিতে সামরিক আইন জারি করেন। তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেখানকার পার্লামেন্ট এর বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ায় সামরিক আইন প্রত্যাহারে বাধ্য হন ইউন। এনিয়ে দেশটিতে একপ্রকার রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়েছে।

সামরিক আইন জারি করার জন্য এবার ক্ষমা চেয়েছেন ইউন। তিনি বলেছেন, ভবিষ্যতে এমন কিছু আর করবেন না। গতকাল শুক্রবার টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে ইউন বলেছেন, আমি অনেক দুঃখিত। যারা মর্মাহত হয়েছেন তাদের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাচ্ছি।

এশিয়ার গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ কোরিয়ায় গত ৫০ বছরের মধ্যে গত মঙ্গলবার প্রথম মার্শাল ল বা সামরিক আইন জারি করা হলে তাতে হতবাক হন দেশটির মানুষ।

ইউন সুক ইওল সেদিন রাতে এক টেলিভিশন ঘোষণায় ‘রাষ্ট্র বিরোধী শক্তি’ এবং উত্তর কোরিয়ার হুমকির কথা উল্লেখ করে সামরিক আইন জারির ঘোষণা দিয়েছিলেন।

তবে এর কিছুক্ষণ পরই পরিষ্কার হয়ে যায় যে- কোনো বিদেশি হুমকি নয়, বরং তার নিজের রাজনৈতিক সংকটের কারণেই তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অবেশেষে সেই সিদ্ধান্তের জন্য ক্ষমা চাইলেন ইউন।

এদিকে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল যদি ক্ষমতায় থাকেন, তাহলে দক্ষিণ কোরীয়রা বড় ধরনের বিপদের মুখে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার শাসক দলের প্রধান। তিনি অবিলম্বে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

পিপলস পাওয়ার পার্টি (পিপিপি)-এর নেতা হান দুং-হুন শুক্রবার এক জরুরি বৈঠকে বলেছেন, তার দল বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পেয়েছে যে মঙ্গলবার রাতে সামরিক আইন জারি করার সময় প্রেসিডেন্ট ইউন গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদদের রাষ্ট্রবিরোধিতার অভিযোগে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এ ছাড়া টানা দুই দিনেরও বেশি সময় ধরে প্রেসিডেন্ট ইউনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা এই বিক্ষোভের বিষয়ে তদন্ত করছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইউনের অভিশংসন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান করে জনগণ পিপিপি’র আইনপ্রণেতাদেরকে হাজার হাজার বার্তা পাঠাচ্ছেন। দ্য চোসুন ডেইলি লিখেছে, সংসদ সদস্য শিন সাং-বুম ফেসবুকে চার হাজারের বেশি মেসেজ পেয়েছেন।

স্থানীয় জরিপকারী প্রতিষ্ঠান রিয়েলমিটারের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দশজনের মাঝে সাত জনের বেশি দক্ষিণ কোরীয় নাগরিক প্রেসিডেন্টের অভিশংসনের পক্ষে। অভিশংসন প্রস্তাব পাশ করতে ২০০ ভোট প্রয়োজন। বিরোধী দলের হাতে ১৯২টি আসন রয়েছে।

অর্থাৎ, প্রস্তাব পাস করার জন্য তাদের শাসক দল থেকে মাত্র আটজনের ভোট প্রয়োজন। এমনিতে শাসক দলের সংসদ সদস্যের সংখ্যা ১০৮ জন। সামরিক শাসন জারির চেষ্টা করার আগে থেকেই প্রেসিডেন্ট ইউন অজনপ্রিয়। দুর্নীতির অভিযোগ ও বিরোধী-নিয়ন্ত্রিত সংসদের কারণে কার্যত একপ্রকার অচলাবস্থার মধ্যে ছিলেন তিনি।