চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি চন্দনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১২টার দিকে ট্রেন থেকে নেমে শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার সময় ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার চন্দন চট্টগ্রাম বান্ডেল রোডের সেবক কলোনির মেথরপট্টি এলাকার মৃত ধারীর ছেলে। তিনি মামলার ১নং আসামি বলে পুলিশ জানায়। বর্তমানে চন্দনকে ভৈরব থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন মিয়া জানান, আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনার পর মামলা হলে প্রধান আসামি চন্দনকে ধরতে চট্টগ্রামের ডিবি পুলিশ গত দুদিন ধরে ভৈরবে অবস্থান করছিল। ডিবি জানতে পারে আসামি চন্দনের শ্বশুরবাড়ি ভৈরব এলাকায়। কিন্তু ডিবি তার খোঁজ পাচ্ছিল না। বুধবার তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জানতে পারে তিনি ভৈরবে অবস্থান করছেন। পরে এ খবর আমাদেরকে জানানো হলে পুলিশ সন্ধ্যার পর থেকে ভৈরব রেলস্টেশনে অবস্থান নেয়। রাত পৌনে ১২টার দিকে তাকে রেলস্টেশন এলাকা থেকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানা পুলিশকে অবগত করা হয়েছে জানিয়ে ওসি শাহিন মিয়া বলেন, চন্দন ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে রওনা হয়ে রাত সাড়ে ৭টায় ভৈরব রেলস্টেশনে নামেন। তার শ্বশুরবাড়ি ভৈরবের মেথরপট্টিতে। ট্রেন থেকে নেমে তিনি স্টেশনে ঘোরাঘুরি করছিলেন। তার ইচ্ছা ছিল রাত গভীর হলে শ্বশুরের বাসায় আশ্রয় নেবেন। এরই মধ্যে আমরা তাকে গ্রেপ্তার করি। বর্তমানে থানা হেফাজতে তাকে রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে পুলিশ আসলেই তাকে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে ঢাকায় গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করলে গত ২৬ নভেম্বর তার অনুসারীরা বিক্ষোভ-ভাঙচুর করে। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে এসি দত্ত রোডের এক বিল্ডিংয়ের সামনে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানায় ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০/১৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করে। ওই মামলার ১নং আসামি চন্দন।
মামলার আসামিরা হলেন- কোতোয়ালী থানাধীন বান্ডেল রোড সেবক কলোনি এলাকার বাসিন্দা চন্দন, আমান দাস, শুভ কান্তি দাস, বুঞ্জা, রনব, বিধান, বিকাশ, রমিত, রুমিত দাশ, নয়ন দাস, গগন দাস, বিশাল দাস, ওমকার দাস, বিশাল, রাজকাপুর, লালা, সামির, সোহেল দাস, শিব কুমার, বিগলাল, পরাশ, গণেশ, ওম দাস, পপি, অজয়, দেবী চরণ, দেব, জয়, দুর্লভ দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য্য। তবে পুলিশ আগেই ৯ জনকে গ্রেপ্তার করলেও প্রধান আসামি চন্দন ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিল।
আর ২ ডিসেম্বর সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলায় নয়জনকে গ্রেপ্তার দেখান (শ্যোন অ্যারেস্ট) আদালত। এরা হলেন- রুমিত দাস, সুমিত দাস, গগন দাস, নয়ন দাস, বিশাল দাস, আমান দাস, মুন মেথর, রাজীব ভট্টাচার্য্য ও দুর্লভ দাস। এদের মধ্যে বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শুভ কান্তি দাস ছাড়া বাকিরা সকলেই পরিছন্নতাকর্মী।