1:20 pm, Sunday, 22 December 2024

পৌনে ৪ বছর পর কারামুক্ত হলেন সাবেক এসপি বাবুল আক্তার

  • Akram
  • Update Time : 09:11:28 am, Thursday, 5 December 2024
  • 20

পৌনে ৪ বছর পর কারামুক্ত হলেন সাবেক এসপি বাবুল আক্তার

Monzu-Info-Tech
Monzu-Info-Tech

চট্টগ্রামে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় প্রায় পৌনে ৪ বছর পর কারামুক্ত হলেন সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গাড়িতে করে বের হলেও গণমাধ্যমকর্মীসহ উপস্থিত কারও সঙ্গে কথা বলেননি তিনি।

তবে মুক্তি সময় কারাগারে বাবুলের বর্তমান স্ত্রী ইসরাত জাহান মুক্তা ও স্বজনরা হাজির হন। তারাও গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি।

এর আগে, স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখে রায় দেন চেম্বার আদালত। তার আগে, প্রায় তিন বছর সাত মাস কারাগারে থাকার পর গত বুধবার হাইকোর্ট থেকে জামিন পান সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। পরে তার জামিন বাতিল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।

গত ১৪ আগস্ট চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে জামিন আবেদন করেছিলেন সাবেক এসপি বাবুল আক্তার। পরে ১৮ আগস্ট বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় সে সময়কার চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এসপি বাবুল আক্তার ওই ঘটনার কিছুদিন আগেই চট্টগ্রাম থেকে বদলি হন। তিনি ঢাকায় কর্মস্থলে যোগ দিতে যাওয়ার পরপরই চট্টগ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

ঘটনার পর টানা সাড়ে তিন বছর তদন্ত করেও ডিবি পুলিশ কোনো কূলকিনারা করতে না পারার পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সংস্থাটি ২০২১ সালের মে মাসে জানায়, স্ত্রী মিতুকে হত্যা করা হয়েছিল বাবুল আক্তারের ‘পরিকল্পনায়’। আর এজন্য খুনিদের ‘লোক মারফত তিন লাখ টাকাও দিয়েছিলেন’ বাবুল। পরে বাবুলের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয় এবং মিতুর বাবা আরেকটি মামলা করেন।

তবে মিতুর বাবার করা সেই মামলা আদালতে না টেকার পর বাবুলের মামলাটিই আবার পুনরুজ্জীবিত হয়। ২০২১ সালের মে মাসে পিবিআই এর হাতে গ্রেপ্তার হন বাবুল। ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সেই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই। তাতে বাবুলসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। এরপর ওই বছরের ১০ অক্টোবর সেই অভিযোগপত্র গ্রহণ করে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত।

গত বছরের ৯ এপ্রিল মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেনের সাক্ষ্যের মধ্যে দিয়ে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মামলাটি বর্তমানে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জসিম উদ্দিনের আদালতে বিচারাধীন। মামলার ৯৭ জন সাক্ষীর মধ্যে মিতুর মা শাহেদা মোশাররফসহ মোট ৫২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বাবুল আক্তার গত ১৪ আগস্ট চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন । বিচারক তা নাকচ করে দিলে তার আইনজীবীরা হাইকোর্টে যান।

বাবুল আক্তারের মুক্তির বিষয়ে আইনজীবী কফিল উদ্দীন চৌধুরী বলেন, উচ্চ আদালতে বাবুল আক্তারের জামিন আদেশের পর তার সাবেক শ্বশুর মোশারফ হোসেন জামিনের স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করেছিলেন। বুধবার চেম্বার জজ আদালত আবেদনটি খারিজ করে দেন। ফলে বাবুল আক্তারের মুক্তি পেতে আর বাধা নেই। মামলায় ভবিষ্যতে নিয়মিত হাজিরার শর্তে বাবুল আক্তার মুক্তির আদেশ দিয়েছে আদালত। আদেশের কপি কারাগারে পাঠানোর পর তিনি মুক্ত হয়েছেন।

Write Your Comment

About Author Information

Akram

কনক্রিট হল ব্লক- বাড়ির শক্ত ভিতের জন্য সেরা পছন্দ

পৌনে ৪ বছর পর কারামুক্ত হলেন সাবেক এসপি বাবুল আক্তার

Update Time : 09:11:28 am, Thursday, 5 December 2024

চট্টগ্রামে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় প্রায় পৌনে ৪ বছর পর কারামুক্ত হলেন সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গাড়িতে করে বের হলেও গণমাধ্যমকর্মীসহ উপস্থিত কারও সঙ্গে কথা বলেননি তিনি।

তবে মুক্তি সময় কারাগারে বাবুলের বর্তমান স্ত্রী ইসরাত জাহান মুক্তা ও স্বজনরা হাজির হন। তারাও গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি।

এর আগে, স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখে রায় দেন চেম্বার আদালত। তার আগে, প্রায় তিন বছর সাত মাস কারাগারে থাকার পর গত বুধবার হাইকোর্ট থেকে জামিন পান সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। পরে তার জামিন বাতিল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।

গত ১৪ আগস্ট চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে জামিন আবেদন করেছিলেন সাবেক এসপি বাবুল আক্তার। পরে ১৮ আগস্ট বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় সে সময়কার চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এসপি বাবুল আক্তার ওই ঘটনার কিছুদিন আগেই চট্টগ্রাম থেকে বদলি হন। তিনি ঢাকায় কর্মস্থলে যোগ দিতে যাওয়ার পরপরই চট্টগ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

ঘটনার পর টানা সাড়ে তিন বছর তদন্ত করেও ডিবি পুলিশ কোনো কূলকিনারা করতে না পারার পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সংস্থাটি ২০২১ সালের মে মাসে জানায়, স্ত্রী মিতুকে হত্যা করা হয়েছিল বাবুল আক্তারের ‘পরিকল্পনায়’। আর এজন্য খুনিদের ‘লোক মারফত তিন লাখ টাকাও দিয়েছিলেন’ বাবুল। পরে বাবুলের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয় এবং মিতুর বাবা আরেকটি মামলা করেন।

তবে মিতুর বাবার করা সেই মামলা আদালতে না টেকার পর বাবুলের মামলাটিই আবার পুনরুজ্জীবিত হয়। ২০২১ সালের মে মাসে পিবিআই এর হাতে গ্রেপ্তার হন বাবুল। ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সেই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই। তাতে বাবুলসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। এরপর ওই বছরের ১০ অক্টোবর সেই অভিযোগপত্র গ্রহণ করে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত।

গত বছরের ৯ এপ্রিল মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেনের সাক্ষ্যের মধ্যে দিয়ে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মামলাটি বর্তমানে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জসিম উদ্দিনের আদালতে বিচারাধীন। মামলার ৯৭ জন সাক্ষীর মধ্যে মিতুর মা শাহেদা মোশাররফসহ মোট ৫২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বাবুল আক্তার গত ১৪ আগস্ট চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন । বিচারক তা নাকচ করে দিলে তার আইনজীবীরা হাইকোর্টে যান।

বাবুল আক্তারের মুক্তির বিষয়ে আইনজীবী কফিল উদ্দীন চৌধুরী বলেন, উচ্চ আদালতে বাবুল আক্তারের জামিন আদেশের পর তার সাবেক শ্বশুর মোশারফ হোসেন জামিনের স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করেছিলেন। বুধবার চেম্বার জজ আদালত আবেদনটি খারিজ করে দেন। ফলে বাবুল আক্তারের মুক্তি পেতে আর বাধা নেই। মামলায় ভবিষ্যতে নিয়মিত হাজিরার শর্তে বাবুল আক্তার মুক্তির আদেশ দিয়েছে আদালত। আদেশের কপি কারাগারে পাঠানোর পর তিনি মুক্ত হয়েছেন।