ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি জুমার নামাজে বিরল খুতবা দিয়েছেন। খুতবায় তিনি জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে আঞ্চলিক সংঘাতের বাস্তব সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলকে মোকাবিলায় তিনি মুসলিম উম্মাহর প্রতি ঐক্যেরও ডাক দিয়েছেন। তথ্যসূত্র : রয়টার্স
গত কয়েক দশকে ইরানের আঞ্চলিক নীতি নিয়ে বেশ সমালোচনা ছিল। তাই ইরানকে একরকম একঘরে করে রাখা হতো মধ্যপ্রাচ্যে। সম্প্রতি ফিলিস্তিনি, লেবাননসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে ইসরায়েলের আগ্রাসনের কারণে ইরানের নীতি পরিবর্তন এবং বিচ্ছিন্নতা অবসানের উদ্যোগ নিয়েছেন খামেনি। প্রকাশ্যে জুমার খুতবা দেওয়া খামেনির জন্য বিরল ঘটনা। তবে শুক্রবার তিনি সেই কাজটিই করেছেন। লেবাননের হিজবুল্লাহর মহাসচিব হাসান নাসরুল্লাহ ইসরায়েলি হামলায় নিহতের পর খবর বের হয়, খামেনি গোপন স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু শুক্রবার খামেনি খুতবা দিয়ে বার্তা দিতে চেয়েছেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা গোপন স্থানে আশ্রয় নেননি।
খুতবায় খামেরি বলেন, ইসরায়েল রাষ্ট্র বেশিদিন টিকবে না। এছাড়া, ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য ইরানের সেনাবাহিনীর অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছেন তিনি। তেহরানের ইমাম খোমেনি গ্র্যান্ড মোসাল্লা মসজিদে জুমার নামাজে অংশগ্রহণকারী মুসল্লিদের উদ্দেশে দেওয়া খুতবায় খামেনি আরও বলেছেন, ‘‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর অসাধারণ এই পদক্ষেপ ছিল সম্পূর্ণ বৈধ ও ন্যায়সঙ্গত। আমেরিকার ‘পাগলা কুকুর’ ও নেকড়ের মতো হিংস্র ইহুদিবাদি এই শাসকগোষ্ঠীর ভয়াবহ সব অপরাধের জন্য আমাদের সেনারা তাদের সামান্য শাস্তিই দিয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘ইসলামিক রিপাবলিক তার দায়িত্ব শক্তি ও দৃঢ়তার সঙ্গে পালন করবে। আমরা পদক্ষেপ নিতে তাড়াহুড়া বা সময়ক্ষেপণ, কোনোটিই করব না।’
সর্বশেষ ২০২০ সালের জানুয়ারিতে, ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর জনসম্মুখে জুমার নামাজে ইমামতি করেছিলেন খামেনি। কুদস ফোর্সের কমান্ডার কাসেম সোলায়মানি এক হামলায় প্রাণ হারালে তার জবাবে ওই হামলা করেছিল তেহরান।
নামাজের পর হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহর স্মরণে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারান নাসরুল্লাহ। তাকে ‘ভাই’ বলে অভিহিত করেছেন খামেনি। বক্তব্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেছেন, নাসরুল্লাহকে নিয়ে তিনি ‘গর্বিত’ এবং তিনি ছিলেন ‘ইসলামি বিশ্বের প্রিয় মুখ, এই অঞ্চলের (মধ্যপ্রাচ্য) প্রাণবন্ত কণ্ঠস্বর, লেবাননের অলংকার।’