রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও ডাকাতিরোধে আজ রোববার থেকে প্রতিটি হাউজিংয়ে অস্থায়ী ক্যাম্প বসিয়েছে সেনাবাহিনী। এসব ক্যাম্প থেকে ওই এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সার্বক্ষণিক কাজ করবেন সেনাসদস্যরা। শনিবার (২৭ অক্টোবর) মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে সেনাবাহিনী, র্যাব-২ ও পুলিশের যৌথ অভিযানে তাদেরকে আটক করা হয়।
আটকদের মধ্যে আসলাম ওরফে রুবেল ওরফে আলম নামে একজন শুক্রবার রাতে বসিলায় মিনি সুপারশপে চাঞ্চল্যকর ডাকাতির হোতা বলে তথ্য দিয়েছেন র্যাব-২ এর সহকারী পরিচালক শিহাব করিম।
তিনি বলেন, আটকদের মধ্যে ৪০ জন সন্দেহভাজন ছিনতাইকারী, বাকি ৫ জন ছিনতাই-ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। আইন অনুযায়ী পরবর্তি ব্যবস্থার জন্য আটকদেরকে এরইমধ্যে মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সরকার পতনের পর থেকে রাজধানীর অন্যতম অপরাধপ্রবণ এলাকা হয়ে ওঠে মোহাম্মদপুর এলাকা; গোলাগুলি, ছিনতাই, ডাকাতি ও অস্ত্র হাতে মারধর-হামলা নিত্যকার চিত্র হয়ে ওঠে। গোলাগুলি ও মারপিটে এক মাসের মধ্যে নিহত হয়েছে অন্তত তিনজন। মাদকের কারবার নিয়ে আধিপত্য ধরে রাখতে গুলি করা হয়েছে আরও কয়েকজনকে।
শুক্রবার রাতে বসিলায় একটি মিনি সুপারশপে অস্ত্রধারীদের ঢুকে ডাকাতির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
একই রাতে ঢাকা উদ্যান এলাকায় ‘গণ ছিনতাইকারী’ দুই দলের মধ্যে সশস্ত্র মহড়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
২০ অক্টোবর মোহাম্মদদীয়া হাউজিং লিমিটেড এলাকার সড়কে ‘নেসলে’ কোম্পানির একটি গাড়ি থামিয়ে ছুরি-চাপাতির মুখে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও ১৭ হাজার টাকার চেক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
এছাড়া ফাঁকা সড়কে কখনও সকালে, কখনও সন্ধ্যা বা রাতে এমনকি ভর দুপুরেও ছিনতাইয়ের ভিডিও ছড়িয়েছে। দোকানে বসে থাকা মানুষদেরকে কুপিয়ে একদল মানুষের অবলীলায় চলে যাওয়ার দৃশ্যও দেখা গেছে।
একের পর পর এমন অপরাধের ঘটনায় ক্ষুব্ধ মোহাম্মদপুরের একদল মানুষ শনিবার বিকালে থানায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেয়। এর মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে থানায় অবস্থানের ঘোষণাও দেওয়া হয়।
এ দাবিকে ‘অত্যন্ত যৌক্তিক’ মন্তব্য করে ঢাকা মহানগর পুলিশ- ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, মোহাম্মদপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আমরা স্থানীয়দেরও সহায়তা চেয়েছি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় বাড়তি ফোর্স মোতায়েনসহ টহল কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে। আলোচনায় নিজেদের অসহায়ত্বের কথা প্রকাশ করেছেন আরও কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা।
এর মধ্যেই শনিবার সন্ধ্যায় জেনিভা ক্যাম্পে দুই পক্ষের গোলাগুলির ঘটনায় শিশুসহ চারজন আহত হয়। এরপরই যৌথ বাহিনীর অভিযান ও গ্রেপ্তারের তথ্য এল।