গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেছেন, ‘পরিষ্কার কথা, এ দেহে প্রাণ থাকতে এই দেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে ঠাঁই দেওয়া হবে না। এই আওয়ামী লীগকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য ভারতসহ বেশ কিছু বিদেশি উঠেপড়ে লেগেছে। সাবের হোসেন চৌধুরীকে মুক্ত করার পেছনে এ রকমই একটি তৎপরতা আছে।’
আজ বুধবার বেলা একটায় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তায় আয়োজিত পথসভায় নুরুল হক এসব কথা বলেন। ‘ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও আহতদের সমবেদনায়’ এই সভার আয়োজন করা হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর মুক্তির সমালোচনা করে নুরুল হক বলেন, ‘সাবের হোসেন চৌধুরীকে মুক্তি দিয়ে কেউ কেউ যদি ভেবে থাকেন যে আওয়ামী লীগ যেমন তৃণমূল বিএনপি গঠন করেছিল, তেমন আরেকটা তৃণমূল আওয়ামী লীগ গঠন করবেন, ভুঁইফোড় আওয়ামী লীগ গঠন করবেন, এসব ভাঁওতাবাজি কর্মকাণ্ডে আমাদের সমর্থন পাবেন না। পরিষ্কারভাবে আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।’
আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের রাজনীতি নিষিদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের জোরালো বক্তব্য পাচ্ছেন না অভিযোগ করে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নুরুল হক আরও বলেন, ‘আমাদের কথা পরিষ্কার, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে বিএনপি ও জামায়াতের জোরালো ও প্রকাশ্য অবস্থান থাকতে হবে। কিন্তু দুঃখজনক, আমরা বিএনপি-জামায়াতের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা, আওয়ামী লীগের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ফ্যাসিবাদীদের নিষিদ্ধ করার সপক্ষে কোনো জোরালো বক্তব্য পাচ্ছি না। আওয়ামী লীগ ভবিষ্যতের বাংলাদেশে যেন রাজনীতি করতে না পারে, দলমত–নির্বিশেষে আমাদের আওয়াজ তুলতে হবে। বাকশালীদের কোনো ক্ষমা নেই। গণহত্যাকারীদের কোনো ক্ষমা নেই।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে নুরুল হক বলেন, ‘আপনাদের আমরা সহযোগিতা করতে চাই। আমরা বলেছি, শুধু একটা নির্বাচনের জন্য আপনাদের এই দেশের জনগণ ক্ষমতায় বসায়নি। আপনারা জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী, জন–আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী এই ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রকে একটা জনবান্ধব রাষ্ট্রকাঠামোয় দাঁড় করাবেন। রাষ্ট্র সংস্কারের পর একটি নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নেবেন। তার পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত আপনাদের আমরা সমর্থন করতে চাই। কিন্তু আপনাদের মতিগতি কিন্তু ভালো দেখতেছি না। তাই আপনাদের সতর্ক করে বলতে চাই, জন–আকাঙ্ক্ষার বাইরে গিয়ে কোনো কিছু করার চেষ্টা করবেন না।’
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যে ভর্তুকি অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়ে সরকারের উদ্দেশে নুরুল হক আরও বলেন, ‘আজকে জনগণ কষ্ট পাচ্ছে, মানুষ দুঃখ পাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। এটা আমরা স্বীকার করি। লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনাসহ উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এ কারণে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উৎপাদন কমে গিয়েছে। সে কারণে ডিমের দাম থেকে শুরু করে সবজির দাম কিছু বাড়ছে। কিন্তু সরকারকে মনে রাখতে হবে, এই সরকার কিন্তু কোনো রাজনৈতিক সরকার নয়। কাজেই জনগণ যাতে কষ্ট না পায়, সেই প্রায়োরিটি তাদের আগে দিতে হবে। প্রয়োজনে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের জন্য ভর্তুকি অব্যাহত রাখতে হবে।’
পথসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, গণ অধিকার পরিষদ গাজীপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক পাঠান আজহারসহ অন্য নেতা–কর্মীরা।
বিডি/জেডআর