ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকে দেশে নির্বাচন কবে হবে তা নিয়ে চলছে জোর আলোচনা।
তবে প্রস্তাবিত রাষ্ট্র সংস্কার, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং হালনাগাদ ভোটার তালিকা শেষ হওয়ার কমপক্ষে ১৮ মাস পর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে- এমনটা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সব ধরনের সহযোগিতা দেবে বলে কথা দিয়েছে বাংলাদেশকে।
বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।
এ সময় নানা বিষয়ের পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয় তাদের সঙ্গে। পরে বৈঠকের বিষয়ে বলতে গিয়ে আগামী নির্বাচন ১৮ মাস পরে নাকি আরও সময় লাগবে তার একটি ধারণা দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি।
তিনি বলেন, সেনাপ্রধান একটা মতামত দিয়েছেন। আমাদের মনে হয়, সেনাপ্রধানের মতামত নিয়ে রয়টার্সের রিপোর্টটা আপনারা পড়েন। ওই রিপোর্টটা পড়লে দেখবেন, রিপোর্টে যেটা আছে, আপনি যদি পুরো দেখেন যে সংস্কারের পরে আরও ১৮ মাস পরে নির্বাচন। সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ওরা বাংলাদেশের নির্বাচন সংস্কার, সব সংস্কারে পুরো সাপোর্ট দেবে। আরেকটি সাইডলাইন বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের মতো একইভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ও দেশ সংস্কারে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলেও জানান প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাতে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, রোহিঙ্গা সংকট, সন্ত্রাস দমন, শ্রমবিষয়ক সংকট ও পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় ব্লিংকেন বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একথা জানানো হয়।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বলা হয়েছে, ড. ইউনূসের সঙ্গে ব্লিংকেনের বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্স হ্যান্ডলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ড. ইউনূসের সঙ্গে অ্যান্টনি ব্লিংকেনের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে সহযোগিতা আরও গভীরতর করার প্রসঙ্গটি আলোচনায় এসেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে ড. ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন।