1:31 am, Thursday, 31 October 2024

শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ, ফল প্রকাশ রবিবার

  • Zuel Rana
  • Update Time : 12:13:29 am, Sunday, 22 September 2024
  • 47
Monzu-Info-Tech
Monzu-Info-Tech

নজিরবিহীন এক অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া গণবিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পতনের দুই বছর পর শনিবার শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। আনুষ্ঠানিক ফলাফল পাওয়া যেতে পারে আগামীকাল রোববার।

নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহেসহ ৩৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এতে প্রথমবারের মতো নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়াতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

এ নির্বাচনকে দেশটির ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক সংস্কারের নির্ধারক হিসেবে দেখা হচ্ছে। পতিত সরকারের আমলে ধ্বংস হয়ে যাওয়া অর্থনীতিকে বিক্রমাসিংহে সচল করতে সক্ষম হলেও কর বৃদ্ধি, ভর্তুকি কমিয়ে দেয়ার কারণে অনেকে এখনো সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

অনুৎপাদনশীল প্রকল্পগুলোতে অত্যধিক ঋণ গ্রহণের ফলে দুই বছর আগে শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়। তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে ওষুধ, খাদ্য, রান্নার গ্যাস এবং জ্বালানির মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের মারাত্মক ঘাটতি দেখা দেয় দেশটিতে। একপর্যায়ে দেশটিতে জনবিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের বাসভবন, তাঁর কার্যালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলো দখল করে নেয়। প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে। গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশ ছাড়ার পর পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই ভোটের আগে শতাধিক সমাবেশ করেন বিক্রমাসিংহে।

শক্ত অবস্থানে আছেন বিরোধী দল সঙ্গী জন বালাওয়েগার (এসজেবি) নেতা সাজিথ প্রেমাদাসাও। তিনি সাবেক এক প্রেসিডেন্টের ছেলে, যিনি ১৯৯৩ সালে গৃহযুদ্ধের সময় আততায়ীর হাতে নিহত হন। সাজিথ প্রেমাদাসা এই নির্বাচনে বেশ ভালো করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

লড়াইয়ে এগিয়ে থাকা আরেক প্রার্থী হলেন ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার পার্টির নেতা অনুড়া কুমার দিসানায়েক। একসময় প্রান্তিক পর্যায়ে চলে যাওয়া মার্ক্সবাদী দলের নেতা তিনি। তবে শ্রীলঙ্কার সংকট অনুড়া কুমার দিসানায়েকের জন্য একটি সুযোগ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

রাজাপক্ষে পরিবার থেকে প্রার্থী হয়েছেন ৩৮ বছর বয়সী নমল রাজাপক্ষে। এই পরিবার থেকে অতীতে দুজন প্রেসিডেন্ট ছিলেন। একজন হলেন নমলের বাবা মাহিন্দা রাজাপক্ষে আর অপরজন চাচা গোতাবায়া রাজাপক্ষে। নমল লড়ছেন শ্রীলঙ্কান পদুজন পেরামুনা (এসএলপিপি) দল থেকে। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা তাঁর আরেক চাচা বাসিল রাজাপক্ষে।

পিপলস স্ট্রাগল অ্যালায়েন্স থেকে লড়ছেন ৪০ বছর বয়সী নুয়ান বোপেজ। গোতাবায়া-বিরোধী গণবিক্ষোভে অংশ নেওয়া ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন তিনি। নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতিবিরোধী কড়া অবস্থান ঘোষণা করেছেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের নতুন আইন অনুযায়ী, একজন ভোটার তিন প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। কোনো একজন প্রার্থী কমপক্ষে ৫০ শতাংশ বা এর চেয়ে বেশি ভোট পেলে, তাঁকে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। আর কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট না পেলে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয় দফা (রান-অফ) ভোট হবে।

Write Your Comment

About Author Information

Zuel Rana

শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ, ফল প্রকাশ রবিবার

Update Time : 12:13:29 am, Sunday, 22 September 2024

নজিরবিহীন এক অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া গণবিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পতনের দুই বছর পর শনিবার শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। আনুষ্ঠানিক ফলাফল পাওয়া যেতে পারে আগামীকাল রোববার।

নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহেসহ ৩৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এতে প্রথমবারের মতো নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়াতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

এ নির্বাচনকে দেশটির ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক সংস্কারের নির্ধারক হিসেবে দেখা হচ্ছে। পতিত সরকারের আমলে ধ্বংস হয়ে যাওয়া অর্থনীতিকে বিক্রমাসিংহে সচল করতে সক্ষম হলেও কর বৃদ্ধি, ভর্তুকি কমিয়ে দেয়ার কারণে অনেকে এখনো সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

অনুৎপাদনশীল প্রকল্পগুলোতে অত্যধিক ঋণ গ্রহণের ফলে দুই বছর আগে শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়। তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে ওষুধ, খাদ্য, রান্নার গ্যাস এবং জ্বালানির মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের মারাত্মক ঘাটতি দেখা দেয় দেশটিতে। একপর্যায়ে দেশটিতে জনবিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের বাসভবন, তাঁর কার্যালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলো দখল করে নেয়। প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে। গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশ ছাড়ার পর পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই ভোটের আগে শতাধিক সমাবেশ করেন বিক্রমাসিংহে।

শক্ত অবস্থানে আছেন বিরোধী দল সঙ্গী জন বালাওয়েগার (এসজেবি) নেতা সাজিথ প্রেমাদাসাও। তিনি সাবেক এক প্রেসিডেন্টের ছেলে, যিনি ১৯৯৩ সালে গৃহযুদ্ধের সময় আততায়ীর হাতে নিহত হন। সাজিথ প্রেমাদাসা এই নির্বাচনে বেশ ভালো করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

লড়াইয়ে এগিয়ে থাকা আরেক প্রার্থী হলেন ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার পার্টির নেতা অনুড়া কুমার দিসানায়েক। একসময় প্রান্তিক পর্যায়ে চলে যাওয়া মার্ক্সবাদী দলের নেতা তিনি। তবে শ্রীলঙ্কার সংকট অনুড়া কুমার দিসানায়েকের জন্য একটি সুযোগ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

রাজাপক্ষে পরিবার থেকে প্রার্থী হয়েছেন ৩৮ বছর বয়সী নমল রাজাপক্ষে। এই পরিবার থেকে অতীতে দুজন প্রেসিডেন্ট ছিলেন। একজন হলেন নমলের বাবা মাহিন্দা রাজাপক্ষে আর অপরজন চাচা গোতাবায়া রাজাপক্ষে। নমল লড়ছেন শ্রীলঙ্কান পদুজন পেরামুনা (এসএলপিপি) দল থেকে। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা তাঁর আরেক চাচা বাসিল রাজাপক্ষে।

পিপলস স্ট্রাগল অ্যালায়েন্স থেকে লড়ছেন ৪০ বছর বয়সী নুয়ান বোপেজ। গোতাবায়া-বিরোধী গণবিক্ষোভে অংশ নেওয়া ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন তিনি। নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতিবিরোধী কড়া অবস্থান ঘোষণা করেছেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের নতুন আইন অনুযায়ী, একজন ভোটার তিন প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। কোনো একজন প্রার্থী কমপক্ষে ৫০ শতাংশ বা এর চেয়ে বেশি ভোট পেলে, তাঁকে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। আর কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট না পেলে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয় দফা (রান-অফ) ভোট হবে।