বিরল এক ঘটনার সাক্ষী হতে চলছে বিশ্ব। পৃথিবীর কক্ষপথে হাজির হচ্ছে নতুন এক ‘উপগ্রহ’। তা-ও আবার মাত্র দুই মাসের জন্য। আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এই ছোট্ট চাঁদের হদিস মেলার দাবি করা হয়েছে। এর পর থেকেই মহাকাশবিজ্ঞানীদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এই নতুন উপগ্রহ।
বলা হচ্ছে, আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের ২৫ তারিখ পর্যন্ত প্রায় দুই মাস পৃথিবীর আকাশে উদয় হবে ক্ষুদ্র এই ‘চাঁদ’-এর। তবে তা এতটাই ছোট যে খালি চোখে দেখা যাবে না। এরপর ফের অন্তর্হিত হবে ‘ক্ষুদ্র চন্দ্রটি’। খবর এনডিটিভির।
কিন্তু কেন এমন সাময়িক আবির্ভাব পৃথিবীর নয়া উপগ্রহের? আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি আসলে ২০২৪ পিটি৫ নামের একটি গ্রহাণু। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে পৃথিবীকে অতিক্রম করবে গ্রহাণুটি। গত মাসেই এর অস্তিত্ব মিলেছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে গ্রহাণুর একটি অংশ মহাকর্ষ বলের কারণে কক্ষপথে ঢুকে যাবে। তা পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করবে আগামী দুই মাস।
এরপর ধীরে ধীরে আকর্ষণ কাটিয়ে ফের চলে যাবে নিজের পথে। আর এই পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করা গ্রহাণুর অংশকে উপগ্রহ হিসেবে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। একে তুলনা করা হচ্ছে চাঁদের ছোট অংশের সঙ্গে।
মহাকাশবিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর নিকটস্থ এ ধরনের যেকোনো বস্তুর সরণ মোটামুটিভাবে যে গতিপথে হয়, তা আমাদের পৃথিবীর খুব কাছে। তাদের মধ্যে কোনো বস্তু এমন ছোট চাঁদ হতেই পারে।
তবে নিজেদের শক্তি হারিয়ে সেসব কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু ২০২৪ পিটি৫ নামের যে গ্রহাণু পৃথিবীকে অতিক্রম করবে চলতি মাসের শেষে, তা থেকে ক্ষয়ে আসা টুকরা নিজের আকর্ষণ বল এবং পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের অঙ্গে পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণ করবে দুই মাস ধরে। এই সময়ের মধ্যে তা শুধু উপগ্রহ হিসেবেই ঘুরবে তা নয়, এর মাধ্যমে তৈরি চৌম্বকক্ষেত্র থেকে অনেক নতুন নতুন তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
১৯৮১ ও ২০২২ সালেও মাধ্যাকর্ষণশক্তির টানে পৃথিবীর কক্ষপথে দুটি গ্রহাণু ঢুকে পড়েছিল। কিছুদিন থাকার পর মহাকর্ষটান কাটিয়ে বেরিয়েও গিয়েছে গ্রহাণুগুলি।