ইয়েমেনের ইরানপন্থি হুথি গোষ্ঠী ইসরায়েলের জাফায় একটি সামরিক স্থাপনায় হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সফলতার দাবি করেছে। রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে হুথিদের সামরিক মুখপাত্র জানান, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০ লাখের বেশি ইসরায়েলিকে আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটতে বাধ্য করেছে এই হামলা। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ খবর জানিয়েছে।
হুথিদের ছোঁড়া ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্রটি ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলের দিকে ছুটে আসে। নয়জন ইসরায়েলি সামান্য আহত হন আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটতে গিয়ে।
একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে সক্রিয় সতর্কতা সংকেতের পর একটি ভূমি থেকে ভূমি ক্ষেপণাস্ত্র পূর্ব থেকে ইসরায়েলের দিকে আসতে দেখা যায় এবং এটি একটি খোলা স্থানে পড়ে, তবে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
সেনাবাহিনী আরও জানায়,ক্ষেপণাস্ত্রটি ইয়েমেন থেকে ছোঁড়া হয় এবং এর প্রতিরোধে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের কারণে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। প্রতিরোধের ফলাফল এখনও তদন্তাধীন।
ইসরায়েলের দৈনিক হারেৎজ জানায়, রবিবার সকালে ইয়েমেন থেকে ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি ইসরায়েলের তেল আবিবের কাছে একটি খোলা স্থানে পড়ে। এটি শনাক্ত হওয়ার পর, অবৈধ বসতিগুলোতে সতর্ক সংকেত বেজে ওঠে এবং আয়রন ডোম ও অ্যারো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে প্রতিরোধক ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়। তবে প্রতিরোধ সফল হয়েছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়।
হারেৎজ আরও জানায়, প্রতিরোধক ক্ষেপণাস্ত্রের টুকরো মডিইন শহরের একটি ট্রেন স্টেশনে পড়েছে, যার ফলে কিছু ক্ষতি হয়। পাশাপাশি, লড শহরের কাছাকাছি কফার ড্যানিয়েল এলাকায়ও খোলা স্থানে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।
ইসরায়েলি আর্মি রেডিও জানায়, ইয়েমেন থেকে নিক্ষিপ্ত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি দুই হাজার কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছে এবং এটি ইসরায়েলে পৌঁছাতে প্রায় ১৫ মিনিট সময় নিয়েছে। বিমানবাহিনী এখনও তদন্ত করছে কেন ক্ষেপণাস্ত্রটি আগেই প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়নি।
রেডিওটি আরও জানায়, অ্যারো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভবত ইয়েমেন থেকে আসা ক্ষেপণাস্ত্রটিকে আংশিকভাবে আঘাত করেছে।
ইসরায়েলের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ নিশ্চিত করেছে যে, সতর্ক সংকেতের সময় আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটতে গিয়ে নয়জন সামান্য আহত হয়েছেন এবং তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
হুথিরা গাজার প্রতি সংহতি প্রকাশ করে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে ইসরায়েলি মালিকানাধীন, পরিচালিত বা ইসরায়েলি বন্দরগামী জাহাজগুলোকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় হুথিরা এই হামলা চালাচ্ছে।