খুচরা বাজারে সরকার নির্ধারিত ৩৬ টাকা দরে আলু বিক্রি নিশ্চিতে মুন্সিগঞ্জে আবারও ট্রাকে করে আলু বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জ কালেক্টর মাঠে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর রিপন। এ দিন ৬ উপজেলায় ৭ হাজার ২০০ কেজি আলু বিক্রি করা হয়।
তিনটি পিকআপে আলু ভর্তি করা হয়। পাঁচ কেজি করে পলিথিনের প্যাকেট করা হয়। উদ্বোধন কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগেই ৩৬ টাকা দামে আলু কিনতে ভিড় জমান ক্রেতারা। বেলা পৌনে একটার দিকে মুন্সিগঞ্জ কালেক্টর মাঠে জেলা প্রশাসকের ট্রাকসেল কার্যক্রম উদ্বোধনের পর ক্রেতারা দীর্ঘ সারি ধরে আলু কেনা শুরু করেন। এভাবে জেলার ছয়টি উপজেলায় আলু বিক্রি শুরু হয়।
এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর রিপন বলেন, কোনোভাবেই ভোক্তা পর্যায়ে ৩৬ এবং হিমাগার পর্যায়ে ২৭ টাকার ওপরে আলু বিক্রি করা যাবে না। এ লক্ষ্যে জেলার ছয় উপজেলায় ট্রাকে করে আলু বিক্রি শুরু করা হয়েছে। প্রতিদিন একেকটি উপজেলায় ৩০ টন করে আলু বিক্রি করা হবে। প্রতিটি উপজেলায় একাধিক ট্রাক ব্যবহার করা হবে। ট্রাকগুলো বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান করবে। সেখান থেকে একেকজন ভোক্তা পাঁচ কেজি করে আলু কিনতে পারবেন।
জেলা প্রশাসক জানান, যে পর্যন্ত ভোক্তাদের মধ্যে চাহিদা আছে, বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলমান থাকবে। সেই সঙ্গে বাজার ও হিমাগার পর্যায়ে সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি নিশ্চিত করতে যথাযথ মনিটরিং চলামান থাকবে। কেউ নির্দেশনা না মানলে তাঁর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর আলুর দাম খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ৩৫–৩৬ টাকা এবং হিমাগার পর্যায়ে ২৬–২৭ টাকা বেঁধে দেওয়া হয়। তবে ব্যবসায়ীরা এই দর না মেনে হিমাগার পর্যায়ে ৩৯-৪০ টাকা এবং খুচরা বাজারে ৪৫-৫০ টাকা কেজি বিক্রি করতে থাকেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ সেপ্টেম্বর মুন্সিগঞ্জের হিমাগার পরিদর্শনে আসেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। হিমাগার পরিদর্শন শেষে তিনি পরদিন থেকে রসিদের মাধ্যমে ২৬-২৭ টাকা কেজি দরে পাইকারি এবং খুচরা বাজারে ৩৫-৩৬ টাকা দরে আলু বিক্রির নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলেন মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে।
শুরুতে প্রশাসনের ব্যাপক তৎপরতা ছিল। হিমাগারে প্রশাসন সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি করতে থাকে। সেই সঙ্গে ট্রাকে করেও আলু বিক্রি করা হতো। মধ্যখানে তৎপরতা ধীরগতির হয়ে যায়। সে সুযোগে মুন্সিগঞ্জের হিমাগার ও খুচরা বাজারে আগের সব রেকর্ড ভেঙে আলু বিক্রি করতে থাকেন ব্যবসায়ীরা। হিমাগার পর্যায়ে প্রতি কেজি ৪৫-৪৭ ও খুচরা বাজারে ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।
এদিকে ট্রাকসেলে আলু বিক্রি শুরু হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে ভোক্তাদের মধ্যে। শুধু ট্রাকে নয়, বাজারেও ৩৬ টাকা কেজি আলু বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিতের দাবি জানান ভোক্তারা। মুন্সিগঞ্জ কালেক্টর মাঠে আসহাবুদ্দিন নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘এর আগেও ট্রাকে করে ৩৬ টাকা দামে আলু বিক্রি শুরু হয়েছিল। সেটি কিছুদিন পরেই বন্ধ হয়ে যায়। এবার দ্বিতীয় দফায় আবার শুরু হয়েছে। এটি যেন বন্ধ না হয়। বাজারে নতুন আলু আসা পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হোক।’