০৬:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুই দফা হামলায় কুয়াকাটা পৌর মেয়র গুরুতর আহত

Reporter Name
  • No Update : ১২:০৭:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ নভেম্বর ২০২৩
  • / 1332

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদারের ওপর দুই দফা হামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কুয়াকাটা পর্যটন মোটেল হলিডে হোমস চত্বরে প্রথমে তিনি হামলার শিকার হন। এরপর কুয়াকাটা পৌরসভার প্রধান সড়কের পাশে একটি ওষুধের দোকানে তিনি দ্বিতীয় দফায় হামলার শিকার হন। হামলায় তাঁর মাথা ফেটে গেছে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

হামলার সময় আনোয়ার হাওলাদারকে রক্ষা করতে গিয়ে আরও চারজন আহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন আনোয়ার হাওলাদারের মালিকাধীন আবাসিক হোটেলের ব্যবস্থাপক মো. বেল্লাল হোসেন (৩৫) এবং সমর্থক আল আমীন (২৭), এছাহাক হাওলাদার (৩০) ও বেল্লাল হাওলাদার (২৫)।

মেয়র আনোয়ার হাওলাদার এ ঘটনার জন্য কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুয়াকাটা পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল বারেক মোল্লাকে দায়ী করেছেন। তিনি রাত ৮টার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, কলাপাড়া পৌর শহরের একটি অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) মো. মহিববুর রহমানের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে এমপির গাড়িতে করে তিনি কুয়াকাটায় ফেরেন। এরপর তিনি এমপির সঙ্গে কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য পর্যটন করপোরেশনের মোটেল হলিডে হোমস চত্বরে যান। এ সময় কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুয়াকাটা পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল বারেক মোল্লা হঠাৎ করে এসে তাঁর ওপর হামলা চালান। তাঁকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এতে তাঁর গায়ের পাঞ্জাবি ছিঁড়ে যায়। একপর্যায়ে বারেক মোল্লার অনুসারী আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা তাঁকে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠানস্থল থেকে জোর করে বের করে দেন। তিনি গিয়ে কুয়াকাটা পৌরসভার প্রধান সড়কের পাশে একটি ওষুধের দোকানে আশ্রয় নেন। এর পর দ্বিতীয় দফা তাঁর ওপর হামলা হয়।

২০২০ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত কুয়াকাটা পৌরসভা নির্বাচনে আনোয়ার হাওলাদার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন। ওই নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আবদুল বারেক মোল্লাকে হারিয়ে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন।
আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ওষুধের ওই দোকানটিতে বসা থাকা অবস্থায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বারেক মোল্লার ছোট ভাই ও লতাচাপলী ইউপি চেয়ারম্যান আনসার উদ্দিন মোল্লা, তাঁর আরেক ভাই মোশারফ মোল্লার নেতৃত্বে ২০-২৫ জন দ্বিতীয় দফায় এ হামলা করেন। তাঁরা লাঠি, হকিস্টিক নিয়ে হামলা করেছেন বলে তিনি জানান। হামলার পর স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এখন তিনি কুয়াকাটা পৌর শহরের একটি বাড়িতে অবস্থান করছেন। তবে তাঁর শরীরের জখম গুরুতর হওয়ায় রাতেই তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান।

এ ব্যাপারে কথা বলতে পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের এমপি মো. মহিববুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুয়াকাটা পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল বারেক মোল্লা বলেন, ‘মেয়র আনোয়ার হাওলাদার একসময় জাতীয় পার্টি করতেন। এখন বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে তাঁর চলাফেরা। আমাদের পূর্বনির্ধারিত শান্তি সমাবেশে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঢুকতে গেলে তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রতিরোধের মুখে পড়েন। তাঁকে কেউ মারধর করেননি, কেউ হামলাও করেনি। তিনি অনুকম্পা পাওয়ার জন্য আমার বিরুদ্ধে সাঁজিয়ে-গুছিয়ে অনেক অভিযোগ করছেন। তাঁর কোনো বক্তব্যই সঠিক নয়।’

Tag : Bangladesh Diplomat, bd diplomat

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

About Author Information

Bangladesh Diplomat বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাট

Bangladesh Diplomat | বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাট | A Popular News Portal Of Bangladesh.

দুই দফা হামলায় কুয়াকাটা পৌর মেয়র গুরুতর আহত

No Update : ১২:০৭:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ নভেম্বর ২০২৩

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদারের ওপর দুই দফা হামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কুয়াকাটা পর্যটন মোটেল হলিডে হোমস চত্বরে প্রথমে তিনি হামলার শিকার হন। এরপর কুয়াকাটা পৌরসভার প্রধান সড়কের পাশে একটি ওষুধের দোকানে তিনি দ্বিতীয় দফায় হামলার শিকার হন। হামলায় তাঁর মাথা ফেটে গেছে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

হামলার সময় আনোয়ার হাওলাদারকে রক্ষা করতে গিয়ে আরও চারজন আহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন আনোয়ার হাওলাদারের মালিকাধীন আবাসিক হোটেলের ব্যবস্থাপক মো. বেল্লাল হোসেন (৩৫) এবং সমর্থক আল আমীন (২৭), এছাহাক হাওলাদার (৩০) ও বেল্লাল হাওলাদার (২৫)।

মেয়র আনোয়ার হাওলাদার এ ঘটনার জন্য কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুয়াকাটা পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল বারেক মোল্লাকে দায়ী করেছেন। তিনি রাত ৮টার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, কলাপাড়া পৌর শহরের একটি অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) মো. মহিববুর রহমানের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে এমপির গাড়িতে করে তিনি কুয়াকাটায় ফেরেন। এরপর তিনি এমপির সঙ্গে কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য পর্যটন করপোরেশনের মোটেল হলিডে হোমস চত্বরে যান। এ সময় কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুয়াকাটা পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল বারেক মোল্লা হঠাৎ করে এসে তাঁর ওপর হামলা চালান। তাঁকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এতে তাঁর গায়ের পাঞ্জাবি ছিঁড়ে যায়। একপর্যায়ে বারেক মোল্লার অনুসারী আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা তাঁকে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠানস্থল থেকে জোর করে বের করে দেন। তিনি গিয়ে কুয়াকাটা পৌরসভার প্রধান সড়কের পাশে একটি ওষুধের দোকানে আশ্রয় নেন। এর পর দ্বিতীয় দফা তাঁর ওপর হামলা হয়।

২০২০ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত কুয়াকাটা পৌরসভা নির্বাচনে আনোয়ার হাওলাদার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন। ওই নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আবদুল বারেক মোল্লাকে হারিয়ে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন।
আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ওষুধের ওই দোকানটিতে বসা থাকা অবস্থায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বারেক মোল্লার ছোট ভাই ও লতাচাপলী ইউপি চেয়ারম্যান আনসার উদ্দিন মোল্লা, তাঁর আরেক ভাই মোশারফ মোল্লার নেতৃত্বে ২০-২৫ জন দ্বিতীয় দফায় এ হামলা করেন। তাঁরা লাঠি, হকিস্টিক নিয়ে হামলা করেছেন বলে তিনি জানান। হামলার পর স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এখন তিনি কুয়াকাটা পৌর শহরের একটি বাড়িতে অবস্থান করছেন। তবে তাঁর শরীরের জখম গুরুতর হওয়ায় রাতেই তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান।

এ ব্যাপারে কথা বলতে পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের এমপি মো. মহিববুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুয়াকাটা পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল বারেক মোল্লা বলেন, ‘মেয়র আনোয়ার হাওলাদার একসময় জাতীয় পার্টি করতেন। এখন বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে তাঁর চলাফেরা। আমাদের পূর্বনির্ধারিত শান্তি সমাবেশে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঢুকতে গেলে তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রতিরোধের মুখে পড়েন। তাঁকে কেউ মারধর করেননি, কেউ হামলাও করেনি। তিনি অনুকম্পা পাওয়ার জন্য আমার বিরুদ্ধে সাঁজিয়ে-গুছিয়ে অনেক অভিযোগ করছেন। তাঁর কোনো বক্তব্যই সঠিক নয়।’