ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বহুল আলোচিত চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে রাজ্য সচিবালয় ঘেরাও করছে হাজার হাজার মানুষ।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকালের দিকে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সচিবালয় অভিমুখে ‘নবান্ন অভিযান’ শুরু করেছে শিক্ষার্থীদের অরাজনৈতিক সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজ।
এদিন কলকাতা এবং হাওড়া থেকে একাধিক মিছিল আসার কথা নবান্নের দিকে। লালবাজার সূত্রে জানা গেছে, সেই মিছিলগুলি আটকাতে সবরকম ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। ২৫ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মিছিল আটকানোর। হাওড়া ব্রিজে কলকাতার দিকের অংশ-সহ ৫ জায়গায় অ্যালুমিনিয়ামের গার্ডওয়াল রেখেছে পুলিশ।
মিছিল আটকাতে ব্রিজের উপর কাঠের সিজার ব্যারিকেড থাকছে। হাওড়ার দিকে নবান্ন যাওয়ার পথে চায় জায়গায় লোহার ব্যারিকেড তৈরি করা হচ্ছে। মিছিলে বিক্ষোভকারীদের ধাক্কায় যাতে সেগুলি উপড়ে না পড়ে তাই রাস্তায় গর্ত খুঁড়ে বড় লোহার পাইপের সাথে ব্যারিকেডগুলি ঝালাই করে দেয়া হয়েছে।
এদিকে, আজ আবার ইউজিসি-এনইটি রয়েছে। পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তির আশঙ্কায় রাজ্য প্রশাসন বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে। হাওড়া থেকে কলকাতা আসার পথে যাত্রীদের সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, রাজ্যের রাজধানী কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় ব্যাপক বিশৃঙ্খলপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজের ডাকে শত শত মানুষ সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেছেন। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার লক্ষ্যে দাঙ্গা পুলিশ টিয়ারগ্যাসের সেল ও জলকামান ব্যবহার করে। বিক্ষোভকারীরা আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে লক্ষ্য করে পাল্টা ইট-পাথর নিক্ষেপ করেছেন।
সূত্রটি আরো জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাজ্যে বিক্ষোভ-মিছিলের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। রাজ্যে অস্থিতিশীলতা তৈরির লক্ষ্যে বিরোধীরা ষড়যন্ত্র করছে বলে সোমবার অভিযোগ করে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেস। বিক্ষোভকারীদের পদযাত্রা ঠেকাতে রাজ্য পুলিশ সচিবালয়ের চারপাশের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা বসিয়েছে। এর মাঝেই সকাল ১১টার দিকে রাজ্য সচিবালয় নবান্নে পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফলা সচিবালয় এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে ৬ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য। তবে বিক্ষোভকারীরা শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সচিবালয় অভিমুখে অগ্রসর হতে শুরু করেছে। এ সময় কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারগ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করেছে পুলিশ। এতে এখন পর্যন্ত প্রাণহানির কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে দেশটির সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস