তাৎপর্যপূর্ণ এক সফরে ঢাকা আসছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে তিনি বাংলাদেশ সফর করবেন। একাধিক দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সুত্র রাতে গণমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানিয়েছে, আগামী ৩০শে আগস্ট আন্তর্জাতিক গুম বিরোধী দিবসের আগেই গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে যুক্ত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গত ১৫ বছর ধরে গুম বিরোধী সনদে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়ার তাগিদ ছিলো। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকার তা অগ্রাহ্য করে চলেছিলো। ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানে হাসিনার স্বৈরশাসনের অবসান এবং পরবর্তীতে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অর্ন্তর্বতীকালীন সরকার কোন রকম পর্যবেক্ষণ বা শর্ত ছাড়াই ওই সনদে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, গুম বিরোধী সনদে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা এবং জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার ঢাকা সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্মরণ করা যায়, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে ৭ শর বেশি মানুষ গুমের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন। অনেকে প্রাণে বাঁচলেও এখনো ১৫০ জনের বেশি মানুষের খোঁজ নেই।
গুমবিরোধী সনদটি ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। ৩২ দেশ এটি অনুস্বাক্ষর করার পরে ২০১০ সালে তা বাস্তবায়ন শুরু হয়। সামগ্রিকভাবে এই সনদের লক্ষ্য গুম বন্ধের পাশাপাশি এই অপরাধের জন্য দায়মুক্তি বন্ধ করা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা দেওয়া। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৭৫টি দেশ এই সনদে যুক্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক ৯টি সনদের ৮টিতে সই করেছে। কিন্তু গুমের সনদে সমর্থন করেনি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেয়া বাংলাদেশের অর্ন্তর্বতী সরকার মানবাধিকার সমুন্নত রাখার পাশাপাশি গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে চায়। এ লক্ষ্যেই গুমবিরোধী সনদে যুক্ত হওয়ার ওই তড়িৎ সিদ্ধান্ত। রাজনীতি সচেতন তবে এক্টিভিস্ট ডিপ্লোমেট নয় এমন পেশাদাররা বলছেন, সনদ সই করার পর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুমের জন্য সরকার বা এর যে কোনো প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহির আওতায় আনার বিষয়ে ভূমিকা রাখবে জাতিসংঘ।