1:42 am, Tuesday, 17 September 2024

বাংলাদেশের স্লোগানে কাঁপছে পশ্চিমবঙ্গ

- ছবি : আনন্দবাজার পত্রিকা

Monzu-Info-Tech
Monzu-Info-Tech
বাংলাদেশের স্লোগানে কাঁপছে পশ্চিমবঙ্গ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির দল তৃণমূল কংগ্রেসের স্লোগান ছিল ‘খেলা হবে’। আরেকটি স্লোগান ছিল ‘জয় বাংলা’। দু’টি স্লোগানেরই বাংলাদেশের। ওই নির্বাচনে বিজেপির পাল্টা ছিল ‘সোনার বাংলা’। ওই শব্দবন্ধের সাথেও রয়েছে বাংলাদেশের নিবিড় সম্পর্ক।

কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যা ঘিরে যখন বিক্ষোভ প্রতিবাদে উত্তাল জয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ, তখন দেখা যাচ্ছে সিপিএম-বিজেপি স্লোগান দিচ্ছে ‘দফা এক দাবি এক, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ।’ একই স্লোগান সামনে রেখে সম্প্রতি বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতার পালাবদল ঘটে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতের ‘নিরাপদ আশ্রয়ে’ থাকতে হচ্ছে শেখ হাসিনাকে। কিন্তু এর পাশাপাশি যে আলোচনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে, তা হলো, সাম্প্রতিক সময়ে কি বাংলাদেশের স্লোগানই দাপট দেখাচ্ছে বাংলার রাজনীতিতে? বাংলাদেশের স্লোগানে কি ‘ঝাঁজ’ বেশি না কি নতুন স্লোগান তৈরিতে এপার বাংলার রাজনৈতিক ঐতিহ্যে মরচে ধরেছে?

রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে শিক্ষাবিদদের বিভিন্ন মত ও ব্যাখ্যাও রয়েছে। কিন্তু একটি বিষয়ে সকলেই একমত, গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের স্লোগানের ‘পশ্চিমবঙ্গীকরণ’ চলছে। আর তা জনপ্রিয়ও হচ্ছে।

রাজ্যের রাজনৈতিক আন্দোলনে রাজনৈতিক স্লোগানের ইতিহাস দীর্ঘ। স্বাধীনতার আগে থেকে তা চলে আসছে। পশ্চিমবঙ্গের তথা বাঙালির দেয়া স্লোগান জাতীয় স্তরের স্লোগানে রূপান্তরিত হয়েছিল। সে সব স্লোগান কালোত্তীর্ণ হয়ে থেকেছে। স্বাধীনতা-উত্তর পশ্চিমবঙ্গেও সেই ধারা অব্যাহত থেকেছে বছরের পর বছর।

তেভাগা আন্দোলনের সময়ে ‘লাঙল যার, জমি তার’ স্লোগান কৃষক আন্দোলনে কার্যত অগ্নিবর্ষণ করেছিল। ষাট বা সত্তরের দশকে বামদের রাজনীতি ছিল মূলত জমিকেন্দ্রিক। সেই সময়েও ওই স্লোগান ফিরে এসেছিল। জোতদার জমিদারদের হাত থেকে ‘বেনামি জমি’ দখল করে তা ভাগচা‌ষিদের মধ্যে বিলিবণ্টন করার কর্মসূচিতে তেভাগার স্লোগান ব্যবহার করা হয়েছিল। নকশালবাড়ি আন্দোলনে আবার চীনা কমিউনিস্ট পার্টির বিভিন্ন স্লোগানের বঙ্গীকরণ করা হয়েছিল। ‘বন্দুকের নলই ক্ষমতার উৎস’ বা চীনা বিপ্লবের লাইন ‘গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরো’ স্লোগান হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছিল। দেওয়ালে দেওয়ালে লেখা হয়েছিল, ‘চীনের চেয়ারম্যান, আমাদের চেয়ারম্যান’।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

Write Your Comment

About Author Information

Bangladesh Diplomat

Popular Post

ভারতকে বাংলাদেশের ব্যাপারে সাবধান করলেন কিংবদন্তি ব্যাটার সুনীল গাভাস্কার

বাংলাদেশের স্লোগানে কাঁপছে পশ্চিমবঙ্গ

Update Time : 12:08:08 am, Wednesday, 21 August 2024
বাংলাদেশের স্লোগানে কাঁপছে পশ্চিমবঙ্গ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির দল তৃণমূল কংগ্রেসের স্লোগান ছিল ‘খেলা হবে’। আরেকটি স্লোগান ছিল ‘জয় বাংলা’। দু’টি স্লোগানেরই বাংলাদেশের। ওই নির্বাচনে বিজেপির পাল্টা ছিল ‘সোনার বাংলা’। ওই শব্দবন্ধের সাথেও রয়েছে বাংলাদেশের নিবিড় সম্পর্ক।

কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যা ঘিরে যখন বিক্ষোভ প্রতিবাদে উত্তাল জয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ, তখন দেখা যাচ্ছে সিপিএম-বিজেপি স্লোগান দিচ্ছে ‘দফা এক দাবি এক, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ।’ একই স্লোগান সামনে রেখে সম্প্রতি বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতার পালাবদল ঘটে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতের ‘নিরাপদ আশ্রয়ে’ থাকতে হচ্ছে শেখ হাসিনাকে। কিন্তু এর পাশাপাশি যে আলোচনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে, তা হলো, সাম্প্রতিক সময়ে কি বাংলাদেশের স্লোগানই দাপট দেখাচ্ছে বাংলার রাজনীতিতে? বাংলাদেশের স্লোগানে কি ‘ঝাঁজ’ বেশি না কি নতুন স্লোগান তৈরিতে এপার বাংলার রাজনৈতিক ঐতিহ্যে মরচে ধরেছে?

রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে শিক্ষাবিদদের বিভিন্ন মত ও ব্যাখ্যাও রয়েছে। কিন্তু একটি বিষয়ে সকলেই একমত, গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের স্লোগানের ‘পশ্চিমবঙ্গীকরণ’ চলছে। আর তা জনপ্রিয়ও হচ্ছে।

রাজ্যের রাজনৈতিক আন্দোলনে রাজনৈতিক স্লোগানের ইতিহাস দীর্ঘ। স্বাধীনতার আগে থেকে তা চলে আসছে। পশ্চিমবঙ্গের তথা বাঙালির দেয়া স্লোগান জাতীয় স্তরের স্লোগানে রূপান্তরিত হয়েছিল। সে সব স্লোগান কালোত্তীর্ণ হয়ে থেকেছে। স্বাধীনতা-উত্তর পশ্চিমবঙ্গেও সেই ধারা অব্যাহত থেকেছে বছরের পর বছর।

তেভাগা আন্দোলনের সময়ে ‘লাঙল যার, জমি তার’ স্লোগান কৃষক আন্দোলনে কার্যত অগ্নিবর্ষণ করেছিল। ষাট বা সত্তরের দশকে বামদের রাজনীতি ছিল মূলত জমিকেন্দ্রিক। সেই সময়েও ওই স্লোগান ফিরে এসেছিল। জোতদার জমিদারদের হাত থেকে ‘বেনামি জমি’ দখল করে তা ভাগচা‌ষিদের মধ্যে বিলিবণ্টন করার কর্মসূচিতে তেভাগার স্লোগান ব্যবহার করা হয়েছিল। নকশালবাড়ি আন্দোলনে আবার চীনা কমিউনিস্ট পার্টির বিভিন্ন স্লোগানের বঙ্গীকরণ করা হয়েছিল। ‘বন্দুকের নলই ক্ষমতার উৎস’ বা চীনা বিপ্লবের লাইন ‘গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরো’ স্লোগান হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছিল। দেওয়ালে দেওয়ালে লেখা হয়েছিল, ‘চীনের চেয়ারম্যান, আমাদের চেয়ারম্যান’।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা