০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বছরে শ্রমিকপ্রতি ৫০০ টাকারও কম ব্যয় হয় গবেষণায়

Reporter Name
  • Update Time : ১১:২৮:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৮৮৯ Time View

গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো ব্যয় করতে চায় না। অধিকাংশ শিল্প বছরে শ্রমিকপ্রতি ৫০০ টাকারও কম ব্যয় করে।

কিন্তু রপ্তানি আয় বাড়াতে হলে উৎপাদনের ক্ষেত্রে উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে; সঙ্গে রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্য বাড়ানোর কাজটিও দ্রুত এগিয়ে নিতে হবে। তাহলেই চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুবিধা নেওয়া সম্ভব হবে। এই সুবিধা না নিতে পারলে রপ্তানির বাজার হারাতে হবে, যার বিরূপ প্রভাব পড়বে সামগ্রিক অর্থনীতিতে।

আজ রোববার রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে ‘টেকনোলজি ইউজ ইন দ্য ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশ’ বা বাংলাদেশের শিল্প খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার শীর্ষক এক সংলাপ অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) উদ্যোগে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

‘অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য শিল্প খাতে উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প নেই। প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে যেভাবে বিপ্লব হয়ে যাচ্ছে, তাতে এর সঙ্গে তাল মেলাতে না পারলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। বিষয়গুলো নিয়ে অনেক কথা হলেও আশানুরূপ উন্নতি হচ্ছে না। এক তৈরি পোশাক খাত ছাড়া রপ্তানির ক্ষেত্রে বলার মতো কোনো খাত নেই। আবার পোশাক খাতেও যে আমরা খুব ভালো প্রযুক্তির ব্যবহার করতে পারছি, তা–ও না।’
ফাহমিদা খাতুন, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক
সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা ফেলো সৈয়দ ইউসুফ সাদাত। তিনি বলেন, ‘শিল্প খাতে উচ্চ প্রযুক্তির ব্যবহারের জন্য ভালো মানের গবেষণা ও উদ্ভাবন প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর এ খাতে ব্যয় করার প্রবণতা খুব কম। ওষুধ, চিকিৎসা ও রাসায়নিকের মতো কয়েকটি শিল্প ছাড়া অধিকাংশ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বছরে শ্রমিকপ্রতি ৫০০ টাকারও কম ব্যয় করে।’

সৈয়দ ইউসুফ সাদাত বলেন, ‘শিল্পপ্রতিষ্ঠানের আকারের ভিত্তিতে দেখলে এই পরিস্থিতি আরও স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। আমাদের দেশের বড় শিল্পের মাত্র ৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগ করেছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে এই বিনিয়োগ যথাক্রমে ২ ও ১ শতাংশ। বিষয়টি আমাদের শিল্প খাতের জন্য অশনিসংকেত।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ‘সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ করা গুরুত্বপূর্ণ। এখন যেমন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ না করলে ও ভালো মানের গবেষণা না হলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। এখনো অনেক ক্ষেত্রে সঠিক বিনিয়োগ হচ্ছে না। বৈদেশিক বিনিয়োগ সেভাবে আসছে না। অনেক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সরকারি মালিকানার কয়েকটি শিল্প বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। কারণ, প্রযুক্তি দরকার। বেসরকারি খাতে গেলে এটা ভালোভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’

শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দায়িত্ব নিতে হবে। অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যা পড়াচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কিন্তু দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হলে শিক্ষায় ছাড় দেওয়া যাবে না। প্রযুক্তিনির্ভর একটা শিল্প কাঠামো গড়ে তুলতে দক্ষ জনবল প্রয়োজন। বাংলাদেশিরা অনেক দ্রুত শিখতে পারে। আমাদের অনেক সম্ভাবনা আছে। কিন্তু সমস্যা একটাই—অসহনশীলতা। সব সময় আরও চাই, আরও চাই। দেশটা আমার না ভেবে, আমাদের ভাবলেই হয়।’

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য শিল্প খাতে উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প নেই। প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে যেভাবে বিপ্লব হয়ে যাচ্ছে, তাতে এর সঙ্গে তাল মেলাতে না পারলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। বিষয়গুলো নিয়ে অনেক কথা হলেও আশানুরূপ উন্নতি হচ্ছে না। এক তৈরি পোশাক খাত ছাড়া রপ্তানির ক্ষেত্রে বলার মতো কোনো খাত নেই। আবার পোশাক খাতেও যে আমরা খুব ভালো প্রযুক্তির ব্যবহার করতে পারছি, তা–ও না।’

Tag : Bangladesh Diplomat, bd diplomat

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Bangladesh Diplomat | বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাট

Bangladesh Diplomat | বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাট | A Popular News Portal Of Bangladesh.

বছরে শ্রমিকপ্রতি ৫০০ টাকারও কম ব্যয় হয় গবেষণায়

Update Time : ১১:২৮:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর ২০২৩

গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো ব্যয় করতে চায় না। অধিকাংশ শিল্প বছরে শ্রমিকপ্রতি ৫০০ টাকারও কম ব্যয় করে।

কিন্তু রপ্তানি আয় বাড়াতে হলে উৎপাদনের ক্ষেত্রে উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে; সঙ্গে রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্য বাড়ানোর কাজটিও দ্রুত এগিয়ে নিতে হবে। তাহলেই চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুবিধা নেওয়া সম্ভব হবে। এই সুবিধা না নিতে পারলে রপ্তানির বাজার হারাতে হবে, যার বিরূপ প্রভাব পড়বে সামগ্রিক অর্থনীতিতে।

আজ রোববার রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে ‘টেকনোলজি ইউজ ইন দ্য ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশ’ বা বাংলাদেশের শিল্প খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার শীর্ষক এক সংলাপ অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) উদ্যোগে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

‘অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য শিল্প খাতে উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প নেই। প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে যেভাবে বিপ্লব হয়ে যাচ্ছে, তাতে এর সঙ্গে তাল মেলাতে না পারলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। বিষয়গুলো নিয়ে অনেক কথা হলেও আশানুরূপ উন্নতি হচ্ছে না। এক তৈরি পোশাক খাত ছাড়া রপ্তানির ক্ষেত্রে বলার মতো কোনো খাত নেই। আবার পোশাক খাতেও যে আমরা খুব ভালো প্রযুক্তির ব্যবহার করতে পারছি, তা–ও না।’
ফাহমিদা খাতুন, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক
সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা ফেলো সৈয়দ ইউসুফ সাদাত। তিনি বলেন, ‘শিল্প খাতে উচ্চ প্রযুক্তির ব্যবহারের জন্য ভালো মানের গবেষণা ও উদ্ভাবন প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর এ খাতে ব্যয় করার প্রবণতা খুব কম। ওষুধ, চিকিৎসা ও রাসায়নিকের মতো কয়েকটি শিল্প ছাড়া অধিকাংশ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বছরে শ্রমিকপ্রতি ৫০০ টাকারও কম ব্যয় করে।’

সৈয়দ ইউসুফ সাদাত বলেন, ‘শিল্পপ্রতিষ্ঠানের আকারের ভিত্তিতে দেখলে এই পরিস্থিতি আরও স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। আমাদের দেশের বড় শিল্পের মাত্র ৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগ করেছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে এই বিনিয়োগ যথাক্রমে ২ ও ১ শতাংশ। বিষয়টি আমাদের শিল্প খাতের জন্য অশনিসংকেত।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ‘সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ করা গুরুত্বপূর্ণ। এখন যেমন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ না করলে ও ভালো মানের গবেষণা না হলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। এখনো অনেক ক্ষেত্রে সঠিক বিনিয়োগ হচ্ছে না। বৈদেশিক বিনিয়োগ সেভাবে আসছে না। অনেক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সরকারি মালিকানার কয়েকটি শিল্প বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। কারণ, প্রযুক্তি দরকার। বেসরকারি খাতে গেলে এটা ভালোভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’

শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দায়িত্ব নিতে হবে। অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যা পড়াচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কিন্তু দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হলে শিক্ষায় ছাড় দেওয়া যাবে না। প্রযুক্তিনির্ভর একটা শিল্প কাঠামো গড়ে তুলতে দক্ষ জনবল প্রয়োজন। বাংলাদেশিরা অনেক দ্রুত শিখতে পারে। আমাদের অনেক সম্ভাবনা আছে। কিন্তু সমস্যা একটাই—অসহনশীলতা। সব সময় আরও চাই, আরও চাই। দেশটা আমার না ভেবে, আমাদের ভাবলেই হয়।’

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য শিল্প খাতে উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প নেই। প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে যেভাবে বিপ্লব হয়ে যাচ্ছে, তাতে এর সঙ্গে তাল মেলাতে না পারলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। বিষয়গুলো নিয়ে অনেক কথা হলেও আশানুরূপ উন্নতি হচ্ছে না। এক তৈরি পোশাক খাত ছাড়া রপ্তানির ক্ষেত্রে বলার মতো কোনো খাত নেই। আবার পোশাক খাতেও যে আমরা খুব ভালো প্রযুক্তির ব্যবহার করতে পারছি, তা–ও না।’