চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনা নৌ সীমানায় মা ইলিশ রক্ষার অভিযানে নেমে জেলেদের হামলায় আহত হয়েছেন উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা ও নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) অন্তত ১৫ জন। আজ সোমবার সকালে পদ্মা-মেঘনার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের লক্ষ্মীরচর, কাঁচিকাটা চরসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনার সময় জেলেদের ইটপাটকেলে তাঁরা আহত হন। এ ঘটনায় ৮৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে যাঁদের নাম জানা গেছে, তাঁরা হলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম, চাঁদপুর নৌ থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান, পুলিশ সদস্য বাবুল কান্তি দে, আবুল বাসার, জসিম উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম ও অনিল। তাঁরা চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল ও মতলব উত্তরের মোহনপুর এলাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
চাঁদপুর সদর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘সকাল আটটায় মতলব উত্তরের বোরোচর ও চর উমেদ এলাকায় আমরা এনডিসি মেশকাতুল ইসলামের নেতৃত্বে নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগের যৌথ অভিযান চালাই। এ সময় চরের বিভিন্ন এলাকা থেকে জেলেরা আমাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা তানজিমুল ইসলাম, নৌ থানার ওসি মো. কামরুজ্জামানসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। সবাই স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেন।’
ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘মা ইলিশ রক্ষায় আমরা দিনরাত প্রায় ২৪ ঘণ্টাই অভিযান অব্যাহত রেখেছি। আজকেও অভিযানে নেমে জেলেদের ইটপাটকেলের নিক্ষেপের শিকার হয়েছি। তবে এর মধ্যে আমিসহ আমাদের পাঁচ থেকে সাতজন পুলিশ সদস্য ইটপাটকেল নিক্ষেপের কারণে সামান্য আহত হয়েছেন। এ ছাড়া মৎস্য কর্মকর্তাসহ আরও কয়েকজন আহত হন।’
এদিকে নৌ পুলিশের অভিযানে আজ বেলা তিনটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ নৌকাসহ ৮৯ জেলেকে আটক করা হয়েছে। এ সময় ৩ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ৮৬০ মিটার জাল উদ্ধার, ৪৬৭ কেজি ইলিশ ও ৩৩টি নৌকা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া চারটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও আটটি মামলা হয়েছে।
নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে প্রতিদিনই জেলেরা হামলার ঘটনা ঘটান। এ হামলার ঘটনায় যৌথ অভিযানে নেমেছে প্রশাসন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ৪৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান, ৩ জনকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা ও অন্যদের নিয়মিত মামলা দিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।