০৭:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএনপিকে ছাড়াই নির্বাচনের পথ ধরেছে সরকার

Reporter Name
  • No Update : ১০:৫৬:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর ২০২৩
  • / 1407

গত ২৮ অক্টোবর এবং তার পরের দিনগুলোর ঘটনাপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে যে প্রশ্নগুলো ইতিমধ্যে অসংখ্যবার উচ্চারিত হয়েছে, তা হলো এর পরে কী হবে, দেশের রাজনীতি কোথায় যাচ্ছে।

এ প্রশ্নের সঙ্গে যুক্ত আছে আরও কিছু প্রশ্ন—আগামী দিনগুলোতে সরকার কী করবে; বিরোধী দলগুলো, বিশেষত বিএনপি কোন পথে এগোবে; ২০২৪ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী দলগুলো যে দাবি নিয়ে আন্দোলন করছিল—একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা, তা আদায়ের পথ আরও কঠিন হয়ে পড়ল কি না।

এ কথা অনস্বীকার্য যে ২০১৮ সালের সাজানো নির্বাচনের পর থেকে কঠোর নিপীড়নমূলক ব্যবস্থার ওপরে নির্ভরশীল ক্ষমতাসীনেরা গত দেড় বছরে যতটা নমনীয়তা প্রদর্শন করেছে, তার একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক সমাজের, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের চাপ। বিদেশিরা যেহেতু বারবার সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন এবং তার পথে অগ্রসর হওয়ার বিষয়ে ‘শান্তিপূর্ণ’ থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং ‘সহিংসতা’কে অগ্রহণযোগ্য বলেছে, সেহেতু এটাও প্রশ্ন যে আন্তর্জাতিক সমাজের অবস্থান কী হবে?

আরও পড়ুন
সরকার রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন যন্ত্রের ওপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে
এ প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়ার জন্য ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত ঘটনাগুলোর পূর্বাপর বিবেচনা করা দরকার। গত দেড় বছরে বিএনপির প্রতিটি সমাবেশের আগে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বক্তব্যগুলোতে যে উত্তেজনা এবং সংঘাতের হুমকি ছিল, সে কথা বিস্মৃত হওয়ার অবকাশ নেই।

গত বছরের আগস্ট মাস থেকে বিএনপির প্রতিটি সমাবেশের সময় ক্ষমতাসীন দল কেবল পাল্টা সমাবেশই আয়োজন করেনি, আইনি নিয়ন্ত্রণ কিংবা নিরাপত্তার নামে পুলিশের অনুমোদনের ক্ষেত্রে যে ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করা হয়েছে, তারই ধারাবাহিকতা ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করেও করা হয়েছে। ২৮ অক্টোবরের আগেই রাজপথ-অলিগলি দখলে রাখার যে ঘোষণা ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দেন, তা কি সংঘাত ও সহিংসতার পটভূমি তৈরি করেনি? ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর কিংবা ২০১৩ সালের ৫ মের ঘটনার পুনরাবৃত্তির হুমকিকে আর যা-ই হোক শান্তির আহ্বান বলা যাবে না।

কিন্তু এসব সত্ত্বেও গত বছরের আগস্ট মাস থেকে বিএনপি প্রতিটি সমাবেশের ক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণই থেকেছে। এখানে স্মরণ করা যেতে পারে যে গত বছর ৭ ডিসেম্বর বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশি অভিযান চালিয়ে এই এলাকাকে রণক্ষেত্রে পরিণত করা হয়েছিল, বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের তিন দিন আগেই এ ঘটনা ঘটে। যে কারণে ২৮ অক্টোবরের পরে প্রশ্ন উঠেছে যে বিএনপি সরকারের পাতা ফাঁদে পা দিয়েছে কি না। এ প্রশ্নের ভেতরে যা প্রায় গ্রহণযোগ্য বলে দাঁড় করানো, তা হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে সহিংসতার উসকানি দেওয়াটা বৈধ এবং বিএনপির সমাবেশে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটছে সমাবেশে যোগদানকারীদের দ্বারা, ফলে এর দায় কেবল বিএনপির।

এসব কারণে ২৮ তারিখ সংঘটিত ঘটনাবলির দিকে নজর দেওয়া জরুরি। সরকারিভাবে নির্দেশ দিয়ে সমাবেশের আগেই নয়াপল্টন অঞ্চলে ইন্টারনেট সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে তথ্যপ্রবাহ এবং যোগাযোগ বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্য নিশ্চয় সমাবেশকে সহযোগিতা করা নয়। এ কথা অস্বীকারের উপায় নেই যে বিএনপির সমাবেশের আশপাশে বিভিন্ন অলিগলিতে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি কর্মীদের বিভিন্ন ধরনের সংঘর্ষ হয়েছে। এগুলোর মাত্রা বিবেচনা করা যেমন জরুরি, তেমনি এটা স্মরণ করা দরকার যে গণমাধ্যমের ভাষ্য অনুযায়ী বিএনপির সমাবেশ সকাল থেকে

Tag : Bangladesh Diplomat, bd diplomat

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

About Author Information

Bangladesh Diplomat বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাট

Bangladesh Diplomat | বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাট | A Popular News Portal Of Bangladesh.

বিএনপিকে ছাড়াই নির্বাচনের পথ ধরেছে সরকার

No Update : ১০:৫৬:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর ২০২৩

গত ২৮ অক্টোবর এবং তার পরের দিনগুলোর ঘটনাপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে যে প্রশ্নগুলো ইতিমধ্যে অসংখ্যবার উচ্চারিত হয়েছে, তা হলো এর পরে কী হবে, দেশের রাজনীতি কোথায় যাচ্ছে।

এ প্রশ্নের সঙ্গে যুক্ত আছে আরও কিছু প্রশ্ন—আগামী দিনগুলোতে সরকার কী করবে; বিরোধী দলগুলো, বিশেষত বিএনপি কোন পথে এগোবে; ২০২৪ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী দলগুলো যে দাবি নিয়ে আন্দোলন করছিল—একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা, তা আদায়ের পথ আরও কঠিন হয়ে পড়ল কি না।

এ কথা অনস্বীকার্য যে ২০১৮ সালের সাজানো নির্বাচনের পর থেকে কঠোর নিপীড়নমূলক ব্যবস্থার ওপরে নির্ভরশীল ক্ষমতাসীনেরা গত দেড় বছরে যতটা নমনীয়তা প্রদর্শন করেছে, তার একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক সমাজের, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের চাপ। বিদেশিরা যেহেতু বারবার সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন এবং তার পথে অগ্রসর হওয়ার বিষয়ে ‘শান্তিপূর্ণ’ থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং ‘সহিংসতা’কে অগ্রহণযোগ্য বলেছে, সেহেতু এটাও প্রশ্ন যে আন্তর্জাতিক সমাজের অবস্থান কী হবে?

আরও পড়ুন
সরকার রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন যন্ত্রের ওপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে
এ প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়ার জন্য ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত ঘটনাগুলোর পূর্বাপর বিবেচনা করা দরকার। গত দেড় বছরে বিএনপির প্রতিটি সমাবেশের আগে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বক্তব্যগুলোতে যে উত্তেজনা এবং সংঘাতের হুমকি ছিল, সে কথা বিস্মৃত হওয়ার অবকাশ নেই।

গত বছরের আগস্ট মাস থেকে বিএনপির প্রতিটি সমাবেশের সময় ক্ষমতাসীন দল কেবল পাল্টা সমাবেশই আয়োজন করেনি, আইনি নিয়ন্ত্রণ কিংবা নিরাপত্তার নামে পুলিশের অনুমোদনের ক্ষেত্রে যে ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করা হয়েছে, তারই ধারাবাহিকতা ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করেও করা হয়েছে। ২৮ অক্টোবরের আগেই রাজপথ-অলিগলি দখলে রাখার যে ঘোষণা ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দেন, তা কি সংঘাত ও সহিংসতার পটভূমি তৈরি করেনি? ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর কিংবা ২০১৩ সালের ৫ মের ঘটনার পুনরাবৃত্তির হুমকিকে আর যা-ই হোক শান্তির আহ্বান বলা যাবে না।

কিন্তু এসব সত্ত্বেও গত বছরের আগস্ট মাস থেকে বিএনপি প্রতিটি সমাবেশের ক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণই থেকেছে। এখানে স্মরণ করা যেতে পারে যে গত বছর ৭ ডিসেম্বর বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশি অভিযান চালিয়ে এই এলাকাকে রণক্ষেত্রে পরিণত করা হয়েছিল, বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের তিন দিন আগেই এ ঘটনা ঘটে। যে কারণে ২৮ অক্টোবরের পরে প্রশ্ন উঠেছে যে বিএনপি সরকারের পাতা ফাঁদে পা দিয়েছে কি না। এ প্রশ্নের ভেতরে যা প্রায় গ্রহণযোগ্য বলে দাঁড় করানো, তা হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে সহিংসতার উসকানি দেওয়াটা বৈধ এবং বিএনপির সমাবেশে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটছে সমাবেশে যোগদানকারীদের দ্বারা, ফলে এর দায় কেবল বিএনপির।

এসব কারণে ২৮ তারিখ সংঘটিত ঘটনাবলির দিকে নজর দেওয়া জরুরি। সরকারিভাবে নির্দেশ দিয়ে সমাবেশের আগেই নয়াপল্টন অঞ্চলে ইন্টারনেট সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে তথ্যপ্রবাহ এবং যোগাযোগ বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্য নিশ্চয় সমাবেশকে সহযোগিতা করা নয়। এ কথা অস্বীকারের উপায় নেই যে বিএনপির সমাবেশের আশপাশে বিভিন্ন অলিগলিতে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি কর্মীদের বিভিন্ন ধরনের সংঘর্ষ হয়েছে। এগুলোর মাত্রা বিবেচনা করা যেমন জরুরি, তেমনি এটা স্মরণ করা দরকার যে গণমাধ্যমের ভাষ্য অনুযায়ী বিএনপির সমাবেশ সকাল থেকে