সরকার পরিচালনায় শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার জন্য উপদেষ্টা সহকারী হিসেবে তাদের নিযুক্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে। এছাড়া সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের যে বিধানগুলোর অপপ্রয়োগ হয় সেগুলো বাতিল করার কথা ভাবছে অন্তর্বর্তী সরকার।
শুক্রবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম বৈঠকে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
যমুনা থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। এসময় যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে মূলত আইনশৃঙ্খলা ও অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, কিছু বিধান গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে পড়লে অসুবিধা হয় না। কিন্তু অগণতান্ত্রিক সরকারের হাতে অপপ্রয়োগ হয়।
‘সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো আইনগুলোর কোনো কোনো বিধান অপপ্রয়োগের ঝুঁকি আছে, সেগুলো নির্ণয় করে বাদ দেয়া হবে, একথাও জানান তিনি।
যত দ্রুত সম্ভব যেন পুলিশ নামতে পারে, সেজন্য সবার সহায়তা চান উপদেষ্টারা।
রিজওয়ানা হাসান হাসান বলেন, পুলিশ অনিরাপদ বোধ করলে নামবে না।
দুর্নীতিবিরোধী সিস্টেম পরিবর্তনের জন্যই অবশ্যই লড়াই হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও নতুন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া নাহিদ ইসলাম বলেন, ছাত্রদের ‘ভয়েস’ নিশ্চিত করতেই উপদেষ্টা পরিষদে যুক্ত হয়েছেন তারা। এছাড়া, ছাত্র প্রতিনিধিদের উপদেষ্টাদের সহকারী হিসেবে কাজ করার সুযোগ থাকবে বলেও তিনি জানান।
তিনি বলেন, ছাত্র সমাজ আমাদের দেশের একটি বড় শক্তি। নতুন সরকারের সঙ্গে আমরা তাদেরও কাজের সুযোগ দিতে চাই। এ লক্ষ্যে উপদেষ্টাদের সঙ্গে ‘সহকারী উপদেষ্টা’ পদ সৃষ্টি করে শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ তৈরি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের যে অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা ছিল, আমাদের বড় বড় দলগুলোও কিন্তু সেই স্বৈরাচারী ব্যবস্থা মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। সে জায়গায় আমাদের ছাত্র সমাজের মাধ্যমেই একটি অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। এই ছাত্রদের ওপর আস্থা রেখেই জনগণ রাস্তায় নেমে এসেছে। এখন আমাদের ছাত্র সমাজই যেহেতু সরকার এবং রাষ্ট্রের সংস্কার নিয়ে কথা বলছে, আমি আশা করব আমাদের সাধারণ জনগণও এই ছাত্র সমাজের ওপর আস্থা রাখবে।
তিনি বলেন, আমাদের উপদেষ্টা প্যানেলে অভিজ্ঞ এবং দক্ষ ব্যক্তিদের মনোনীত করেছি এবং ছাত্রদের পক্ষ থেকে আমরা দুইজন উপদেষ্টা মনোনীত হয়েছি। এর পাশাপাশি উপদেষ্টাদের সঙ্গে সহকারী হিসেবে ছাত্ররা কাজ করার সুযোগ পাবে।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা এক দফা দাবির মুখে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যান শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বঙ্গভবনের দরবার হলে প্রায় ৪০০ অতিথির উপস্থিতিতে শপথ নেন তিনি। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাকে শপথ পাঠ করান।
ড. ইউনূসের পর শপথ নেন ১৩ উপদেষ্টা। ইতোমধ্যে নতুন সরকারের সদস্যদের মধ্যে মন্ত্রণালয়ও বরাদ্দ হয়েছে।