4:12 am, Friday, 20 September 2024

সচিবালয়ে জোট বাঁধছেন পদ-পদোন্নতি ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তারা

Monzu-Info-Tech
Monzu-Info-Tech
সচিবালয়ে জোট বাঁধছেন পদ-পদোন্নতি ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তারা

 

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বদলে গেল প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের চেহারা। সচিবালয়ে আজ মঙ্গলবার পদ-পদোন্নতি থেকে ‘বঞ্চিত’ একদল কর্মকর্তা-কর্মচারীর তৎপরতা দেখা গেছে। সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের লাইব্রেরি কক্ষে তাঁরা সভাও করেছেন। এ ছাড়া সচিবালয়ের বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতেও দেখা গেছে। তাঁদের বক্তব্য হলো, তাঁরা দীর্ঘদিন পদোন্নতি ও পদায়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এখন তাঁরা ন্যায্য অধিকার পেতে চান।

ওই বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বঞ্চিত কর্মকর্তাদের কেউ কেউ বলেছেন, যাঁদের যখন পদোন্নতির সময় হয়েছিল, তখন থেকেই পদোন্নতি চান তাঁরা (ভূতাপেক্ষ)।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের লাইব্রেরিতে অনুষ্ঠিত সভায় কয়েকজন বঙ্গবন্ধুর ছবি খুলে ফেলার চেষ্টা করেন। অবশ্য কয়েকজন বাধা দিলে তাঁরা তা করতে পারেননি।

এদিকে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ভয়-শঙ্কা নিয়ে সচিবালয়ে এসেছিলেন অনেকে। অনেকে আসেননি। ফলে কাজ হয়নি, বরং আতঙ্কের কারণে দুপুর ১২টার দিকে আকস্মিকভাবে অফিস ছাড়েন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অন্যদিকে মুছে ফেলা হয়েছে মন্ত্রীদের নাম। নামানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করা শেখ হাসিনার ছবি। বিভিন্ন দেয়াল থেকে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবিসহ অন্যান্য ব্যানার-ফেস্টুনও সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। আজ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরই মধ্যে দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আজই ছিল প্রথম কর্মদিবস।

বেলা ১১টার পর সচিবালয়ে দু-একজন কর্মকর্তা আসছিলেন। কোনো কোনো কর্মকর্তার দপ্তর তখনো ফাঁকা, আসেননি। তবে অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীই উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু অফিসে এলেও নেই কোনো কাজকর্ম। দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলে সময় পার করছিলেন তাঁরা। কেউ কেউ অফিস ছেড়ে সচিবালয়ের ভেতর গল্পগুজব করে সময় পার করেন।

কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, এখন কার্যত সরকার নেই। ফলে আজ তাঁরা তেমন কোনো নির্দেশনা পাননি। সরকারি চাকরি করেন, তাই অফিসে এসেছেন।

সরকারি অফিস সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আজ দুপুর ১২টার দিকেই কর্মকর্তা–কর্মচারীরা অফিস ছেড়ে বের হয়ে যান। এ সময় কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আজ ‘অটো ছুটি’ হয়ে গেছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর চোখেমুখে ভয়ের ছাপ। শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগের পর স্বাভাবিকভাবেই মন্ত্রীরা আর আসেননি। তবে বেশ কয়েকজন সচিব অফিস করেছেন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের কয়েকজন সচিব তখনো আসেননি।

Write Your Comment

About Author Information

Bangladesh Diplomat

Popular Post

সচিবালয়ে জোট বাঁধছেন পদ-পদোন্নতি ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তারা

Update Time : 10:05:47 pm, Tuesday, 6 August 2024
সচিবালয়ে জোট বাঁধছেন পদ-পদোন্নতি ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তারা

 

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বদলে গেল প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের চেহারা। সচিবালয়ে আজ মঙ্গলবার পদ-পদোন্নতি থেকে ‘বঞ্চিত’ একদল কর্মকর্তা-কর্মচারীর তৎপরতা দেখা গেছে। সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের লাইব্রেরি কক্ষে তাঁরা সভাও করেছেন। এ ছাড়া সচিবালয়ের বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতেও দেখা গেছে। তাঁদের বক্তব্য হলো, তাঁরা দীর্ঘদিন পদোন্নতি ও পদায়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এখন তাঁরা ন্যায্য অধিকার পেতে চান।

ওই বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বঞ্চিত কর্মকর্তাদের কেউ কেউ বলেছেন, যাঁদের যখন পদোন্নতির সময় হয়েছিল, তখন থেকেই পদোন্নতি চান তাঁরা (ভূতাপেক্ষ)।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের লাইব্রেরিতে অনুষ্ঠিত সভায় কয়েকজন বঙ্গবন্ধুর ছবি খুলে ফেলার চেষ্টা করেন। অবশ্য কয়েকজন বাধা দিলে তাঁরা তা করতে পারেননি।

এদিকে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ভয়-শঙ্কা নিয়ে সচিবালয়ে এসেছিলেন অনেকে। অনেকে আসেননি। ফলে কাজ হয়নি, বরং আতঙ্কের কারণে দুপুর ১২টার দিকে আকস্মিকভাবে অফিস ছাড়েন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অন্যদিকে মুছে ফেলা হয়েছে মন্ত্রীদের নাম। নামানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করা শেখ হাসিনার ছবি। বিভিন্ন দেয়াল থেকে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবিসহ অন্যান্য ব্যানার-ফেস্টুনও সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। আজ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরই মধ্যে দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আজই ছিল প্রথম কর্মদিবস।

বেলা ১১টার পর সচিবালয়ে দু-একজন কর্মকর্তা আসছিলেন। কোনো কোনো কর্মকর্তার দপ্তর তখনো ফাঁকা, আসেননি। তবে অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীই উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু অফিসে এলেও নেই কোনো কাজকর্ম। দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলে সময় পার করছিলেন তাঁরা। কেউ কেউ অফিস ছেড়ে সচিবালয়ের ভেতর গল্পগুজব করে সময় পার করেন।

কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, এখন কার্যত সরকার নেই। ফলে আজ তাঁরা তেমন কোনো নির্দেশনা পাননি। সরকারি চাকরি করেন, তাই অফিসে এসেছেন।

সরকারি অফিস সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আজ দুপুর ১২টার দিকেই কর্মকর্তা–কর্মচারীরা অফিস ছেড়ে বের হয়ে যান। এ সময় কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আজ ‘অটো ছুটি’ হয়ে গেছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর চোখেমুখে ভয়ের ছাপ। শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগের পর স্বাভাবিকভাবেই মন্ত্রীরা আর আসেননি। তবে বেশ কয়েকজন সচিব অফিস করেছেন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের কয়েকজন সচিব তখনো আসেননি।