5:47 am, Sunday, 8 September 2024

মিরপুরে পুলিশ-রিকশাচালক ব্যাপক সংঘর্ষ, পুলিশ বক্সে আগুন, অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাঙচুর

Monzu-Info-Tech
Monzu-Info-Tech
মিরপুরে পুলিশ-রিকশাচালক ব্যাপক সংঘর্ষ, পুলিশ বক্সে আগুন, অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাঙচুর

রাজধানীতে অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করার প্রতিবাদে এবার মিরপুরের কালশীতে মিরপুরে পুলিশ-রিকশাচালক ব্যাপক সংঘর্ষ, ট্রাফিক পুলিশের বক্সে আগুন ও অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করেছে আন্দোলনরত অটোরিকশা চালকরা।

১৯ মে রোববার, বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে কালশী মোড়ে অবস্থিত ট্রাফিক পুলিশের বক্সে আগুন দেয় আন্দোলনকারীরা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পল্লবী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেসুর রহমান বলেন, কালশীতে আন্দোলনকারীরা সহিংস আন্দোলন করছে। তারা কালশী মোড়ে অবস্থিত একটি পুলিশ বক্সে আগুন দিয়েছে। এটি ট্রাফিক পুলিশের একটি বক্স। আমরা ঘটনাস্থলে আছি, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি।

এর আগে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের প্রতিবাদে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে করে চালকরা। এ সময় মিরপুর ১০ নম্বর সড়কে যানবাহন ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা। পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। কয়েকজন শ্রমিকের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ সময় অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করেন সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করা রিকশাচালকরা। সংঘর্ষের ফলে ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

১৯ মে রোববার, সকাল থেকে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকায় অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে চালকরা। এতে মিরপুর ১০, ১১ ও ১২ নম্বরে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এলাকাজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। গন্তব্যে পৌঁছাতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। দুপুরে কালশী রোড অবরোধ করে আন্দোলনরত চালকরা।

তাদের দাবি, ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে রাস্তায় এলে পুলিশ ধরপাকড় করছে। তাদের অনেকের গাড়ি আটকে রেখেছে পুলিশ। কোনো শর্ত ছাড়াই রাস্তায় তাদের অটোরিকশা ও ইজিবাইক চালাতে দিতে হবে।

অটোরিকশাচালকরা সড়ক অবরোধ করায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। চালকরা লাঠি হাতে সড়কের বিভিন্ন অংশে অবস্থান নেওয়ায় আতঙ্ক ছড়ায়। রাস্তা ফাঁকা থাকলেও গাড়ি চালাতে সাহস করেননি অনেকেই। তবে ঝুঁকি নিয়ে যারা গন্তেব্য যাওয়ার চেষ্টা করেছেন তাদের অনেকে হামলার শিকার হয়েছেন। এ অবস্থায় চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন গন্তব্যমুখী মানুষ। অটোরিকশাচালকদের বিক্ষোভের কারণে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষদের কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়।

দুপুর ২টা ১৮ মিনিটের দিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াছ মোল্লা ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি শ্রমিকদের সরিয়ে বেশ কিছু গাড়ি চলাচলের পথ করে দিলে অটোরিকশাচালকরা তাতে বাধা দেয়। এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। জলকামান নিয়ে পুলিশ ফের শ্রমিকদের ধাওয়া করে সরিয়ে দেয়।

এমপি ইলিয়াছ মোল্লা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ আমাদের মানতে হবে। পাশাপাশি মানবিক দিকটিও আমাদের দেখতে হবে। এ সময় তিনি অটোরিকশাচালকদের কাছে দুই দিনের সময় চান।

বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে মিরপুর-১০ এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা তাদের আন্দোলন থেকে সরে আসে। মিরপুর ১০ থেকে ২, ১৩ ও ১১ গামী সড়ক এখন সচল রয়েছে। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। এ সড়কে টানা ৫ ঘণ্টারও বেশি যানজট ছিল।

বিক্ষোভের কারণে মেট্রোরেল ও যাত্রীর নিরাপত্তার স্বার্থে মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনের দুটি গেট বন্ধ রাখে পুলিশ। এমআরটি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ খান এ তথ্য জানান।

এমআরটি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, মেট্রোরেল ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনের উত্তরের দুটি গেট বন্ধ রাখা হয়েছে। এ গেট দুটি বন্ধ থাকলেও অন্য গেট যথারীতি খোলা রয়েছে এবং যাত্রীরা চলাচল করছে।

Write Your Comment

About Author Information

Bangladesh Diplomat বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাট

Bangladesh Diplomat | বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাট | A Popular News Portal Of Bangladesh.
Popular Post

মিরপুরে পুলিশ-রিকশাচালক ব্যাপক সংঘর্ষ, পুলিশ বক্সে আগুন, অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাঙচুর

Update Time : 06:12:58 pm, Sunday, 19 May 2024
মিরপুরে পুলিশ-রিকশাচালক ব্যাপক সংঘর্ষ, পুলিশ বক্সে আগুন, অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাঙচুর

রাজধানীতে অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করার প্রতিবাদে এবার মিরপুরের কালশীতে মিরপুরে পুলিশ-রিকশাচালক ব্যাপক সংঘর্ষ, ট্রাফিক পুলিশের বক্সে আগুন ও অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করেছে আন্দোলনরত অটোরিকশা চালকরা।

১৯ মে রোববার, বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে কালশী মোড়ে অবস্থিত ট্রাফিক পুলিশের বক্সে আগুন দেয় আন্দোলনকারীরা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পল্লবী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেসুর রহমান বলেন, কালশীতে আন্দোলনকারীরা সহিংস আন্দোলন করছে। তারা কালশী মোড়ে অবস্থিত একটি পুলিশ বক্সে আগুন দিয়েছে। এটি ট্রাফিক পুলিশের একটি বক্স। আমরা ঘটনাস্থলে আছি, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি।

এর আগে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের প্রতিবাদে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে করে চালকরা। এ সময় মিরপুর ১০ নম্বর সড়কে যানবাহন ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা। পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। কয়েকজন শ্রমিকের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ সময় অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করেন সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করা রিকশাচালকরা। সংঘর্ষের ফলে ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

১৯ মে রোববার, সকাল থেকে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকায় অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে চালকরা। এতে মিরপুর ১০, ১১ ও ১২ নম্বরে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এলাকাজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। গন্তব্যে পৌঁছাতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। দুপুরে কালশী রোড অবরোধ করে আন্দোলনরত চালকরা।

তাদের দাবি, ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে রাস্তায় এলে পুলিশ ধরপাকড় করছে। তাদের অনেকের গাড়ি আটকে রেখেছে পুলিশ। কোনো শর্ত ছাড়াই রাস্তায় তাদের অটোরিকশা ও ইজিবাইক চালাতে দিতে হবে।

অটোরিকশাচালকরা সড়ক অবরোধ করায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। চালকরা লাঠি হাতে সড়কের বিভিন্ন অংশে অবস্থান নেওয়ায় আতঙ্ক ছড়ায়। রাস্তা ফাঁকা থাকলেও গাড়ি চালাতে সাহস করেননি অনেকেই। তবে ঝুঁকি নিয়ে যারা গন্তেব্য যাওয়ার চেষ্টা করেছেন তাদের অনেকে হামলার শিকার হয়েছেন। এ অবস্থায় চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন গন্তব্যমুখী মানুষ। অটোরিকশাচালকদের বিক্ষোভের কারণে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষদের কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়।

দুপুর ২টা ১৮ মিনিটের দিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াছ মোল্লা ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি শ্রমিকদের সরিয়ে বেশ কিছু গাড়ি চলাচলের পথ করে দিলে অটোরিকশাচালকরা তাতে বাধা দেয়। এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। জলকামান নিয়ে পুলিশ ফের শ্রমিকদের ধাওয়া করে সরিয়ে দেয়।

এমপি ইলিয়াছ মোল্লা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ আমাদের মানতে হবে। পাশাপাশি মানবিক দিকটিও আমাদের দেখতে হবে। এ সময় তিনি অটোরিকশাচালকদের কাছে দুই দিনের সময় চান।

বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে মিরপুর-১০ এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা তাদের আন্দোলন থেকে সরে আসে। মিরপুর ১০ থেকে ২, ১৩ ও ১১ গামী সড়ক এখন সচল রয়েছে। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। এ সড়কে টানা ৫ ঘণ্টারও বেশি যানজট ছিল।

বিক্ষোভের কারণে মেট্রোরেল ও যাত্রীর নিরাপত্তার স্বার্থে মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনের দুটি গেট বন্ধ রাখে পুলিশ। এমআরটি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ খান এ তথ্য জানান।

এমআরটি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, মেট্রোরেল ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনের উত্তরের দুটি গেট বন্ধ রাখা হয়েছে। এ গেট দুটি বন্ধ থাকলেও অন্য গেট যথারীতি খোলা রয়েছে এবং যাত্রীরা চলাচল করছে।