গাজায় একের পর এক যুদ্ধাপরাধ ও মানবিকতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে চলতি সপ্তাহেই গ্রেপ্তার হতে পারেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সোমবার (২৯ এপ্রিল) মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য দেয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় একের পর এক যুদ্ধাপরাধ ও মানবিকতাবিরোধী অপরাধের কারণে নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহুসহ প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চলতি সপ্তাহেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারে। সম্ভাব্য সেই পরোয়ানা এড়াতে ইতোমধ্যে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে দেশটির যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা।
সূত্রটি আরো জানিয়েছে, এ প্রসঙ্গে আইসিসির সাথে যোগাযোগ করেছেন এনবিসির সাংবাদিকরা। জবাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এক মুখপাত্র বলেছেন, আমরা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পরিস্থিতি নিয়ে একটি মুক্ত ও অবাধ তদন্ত পরিচালনা করছি। এই কাজের সুবিধার্থে যেকোনো পদক্ষেপ নিতে হতে পারে। কিন্তু বিষয়টি যেহেতু তদন্তাধীন বিষয়, তাই এ প্রসঙ্গে এখনই বিস্তারিত কিছু বলার সুযোগ নেই।
এদিকে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। সম্ভাব্য এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে ভণ্ডুল করে দিতে পারে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সহযোগী দেশগুলো উদ্বিগ্ন। সোমবার (২৯ এপ্রিল) ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
বিষয়টির সাথে সম্পৃক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তিদের উদ্ধৃত করে নিউজ আউটলেটটি জানায়, আইসিসি পরোয়ানা জারি করলে ইসরায়েল চুক্তি থেকে সরে যেতে পারে।
ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা সোমবার টাইমস অফ ইসরায়েলকে বলেন, আদালত যদি ইসরায়েলি নেতাদের জন্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে তবে এটি সম্ভাব্য বন্দী চুক্তি বাতিল করে দিতে পারে।
সম্ভাব্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়টি মঙ্গলবার বিকেলের মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচ্যসূচির প্রথম বিষয়বস্তু হিসেবে আলোচনা করা হয়েছিল। হিব্রু মিডিয়া বলেছে, এটি দেরিতে যোগ করা হয়েছে এবং নেতানিয়াহু নিজেই এই বিষয়ে একটি উপস্থাপনা করবেন।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার বলেছে, তারা ইসরায়েলি মিশনকে জানিয়েছে যে সিনিয়র রাজনৈতিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হতে পারে।
ইসরায়েল বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির এখতিয়ার স্বীকার করে না। তবে যেকোনো পরোয়ানা ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের অন্য দেশে গ্রেপ্তারের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
সূত্র : টাইমস অব ইসরাইল এবং আল জাজিরা