জীবনযাপনের নানা ক্ষেত্রে খরচ বেড়ে যাওয়ায় আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য বিধান করতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। খরচের লাগাম টেনে ধরাটা তাই জরুরি। ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে হলেও কমাতে হবে ব্যয়ের খাত। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনযাপনে কিছু খরচ চাইলেও বাদ দিতে পারবেন না। এই যেমন খাবার। খাবার তো আর চাইলেও বাদ দিতে পারবেন না। তবে পরিকল্পনা করে সেখান থেকেও কিছু টাকা বাঁচিয়ে নিতে পারবেন।
গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হিউম্যান সায়েন্সের (সরকারি গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ) রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক রিনাত ফৌজিয়া বলেন, ‘সংসারের খরচ বাবদ একটা অংশ ব্যয় হয় খাবারে। তাই বাজারের ক্ষেত্রে পরিকল্পনাটা খুব জরুরি। মাসিক আয় থেকে কতটুকু অংশ বাজার খরচে ব্যয় করবেন, সেটা মাসের শুরুতেই ঠিক করে নিন। পুরো মাসের যে বাজারগুলো একবারে করে রাখা সম্ভব, তার তালিকা করে নিন। এতে আপনার টাকাপয়সা ও সময়-শক্তি—দুই–ই সাশ্রয় হবে।’
আপনার মাসিক আয়ের মোট অর্থ কীভাবে বাজেট করবেন, সেই সম্বন্ধে দারুণ এক উপায় বাতলে দিয়েছে জনপ্রিয় বই অল ইয়োর ওর্থ: দ্য আলটিমেট লাইফটাইম মানি প্ল্যান। আপনি যদি মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করেন, তাহলে সেটা ২৫, ১৫ ও ১০ হাজার—এই তিন ভাগ করে ফেলুন। সঞ্চয় খাতে যাবে ১০ হাজার, ১৫ হাজারে নিজের শখ মেটাবেন, বাকি ২৫ হাজার যাবে নিত্য খরচে। এই ২৫ হাজারের মধ্যেই আপনার বাড়িভাড়া, বাজার খরচসহ নানা রকম বিল মেটাতে হবে।
তাই মাসের শুরুতেই ভাড়া ও বিলের টাকা এক পাশে রেখে বাজারের টাকা আলাদা করুন। এই বাজারের টাকা দিয়ে কীভাবে নিজের পুরো মাসের খাবার খরচ মেটাবেন, সেটা নিয়ে ভাবতে বসুন। মাসের শুরুতেই যদি প্রধান বাজারগুলো সেরে নিতে পারেন, তাহলে যেমন টাকা কিছুটা সাশ্রয় হবে, তেমন সময় ও শ্রম কম লাগবে। অধ্যাপক রিনাত ফৌজিয়ার মতে, অনেকের হয়তো মাসে চাল লাগে ২০ কেজি, তিনি যদি ৫ কেজি করে ৪ বারে সেই চাল খুচরা কেনেন, তাহলে খরচ যেমন বাড়বে, নিজের শক্তিরও অপচয় হবে। তাই পরিকল্পনা করে একবারে সেটা কিনে নিলেই ভালো।