সারা বিশ্বে প্রতিবছর আটজনের মধ্যে একজন নারীর স্তন ক্যানসার হয়। আমাদের দেশে প্রতিবছর ২৪ হাজারের বেশি মানুষের স্তন ক্যানসার শনাক্ত হচ্ছে। এক অনলাইন আলোচনায় এই তথ্য জানান জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের অনকোলজি বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. খন্দকার শামসুজ্জামান।
অক্টোবর মাস, স্তন ক্যানসার সচেতনতার বিশেষ মাস। এ উপলক্ষে এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড আয়োজিত ‘বিশ্বমানের ক্যানসার চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে’ শীর্ষক অনলাইন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এ পর্বে আলোচনা হয় ‘বাংলাদেশে স্তন ক্যানসার চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার’ বিষয়ে। অনুষ্ঠানটি গতকাল মঙ্গলবার সরাসরি প্রচারিত হয় প্রথম আলো ও এসকেএফের ফেসবুক পেজে।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রোকাইয়া সুলতানা এবং জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ডা. মিতু দেবনাথ।
সঞ্চালক ডা. খন্দকার শামসুজ্জামান প্রথমেই জানতে চান, মধ্যম আয়ের দেশ বাংলাদেশের স্তন ক্যানসারে আক্রান্তের হার বৈশ্বিক হারের তুলনায় কতটা উদ্বেগজনক? উত্তরে ডা. রোকাইয়া বলেন, স্তন ক্যানসার বিশ্বে নারীদের মধ্যে সবচেয়ে নির্ণীত ক্যানসার। ক্যানসারের কারণে মৃত্যুহারেও এটি প্রথম। আর নারী-পুরুষ মিলিয়ে এটি পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। খুবই উদ্বেগজনক তথ্য, বাংলাদেশে এর অবস্থান ১৪তম। সচেতনতাই পারে এ উদ্বেগ কাটাতে।
আমাদের দেশে ১০ জনের মধ্যে ৮ জন নারীই স্তন ক্যানসার নিয়ে সচেতন নন। ফলে ক্যানসার শনাক্ত হতে বেশি সময় লেগে যায়। তাই প্রয়োজন সময়োপযোগী পদক্ষেপ। সেটা কীভাবে নিতে হবে, তার উত্তর দেন ডা. মিতু দেবনাথ। তিনি বলেন, এ ধরনের ক্যানসারে সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে যাঁরা, তাঁরা যদি নিয়মিত ‘স্ক্রিনিং প্রটোকলে’ থাকেন, তাহলে এর ঝুঁকি কিছুটা কমবে। তাই স্তনে ব্যথামুক্ত চাকা থাকুক বা না থাকুক, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
কিন্তু স্তন ক্যানসার কী, কেন হয়? বয়সভিত্তিক কারা এই ক্যানসারে বেশি আক্রান্ত হন? সঞ্চালকের এমন প্রশ্নে ডা. রোকাইয়া বলেন, সাধারণত ক্যানসার হচ্ছে শরীরের অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন। আর স্তন ক্যানসার হচ্ছে, স্তনের কোষগুলো যখন অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভাজিত হয়ে যায়, তখন সেখানে একটি মাংসপিণ্ড বড় হতে থাকে, যা পরবর্তী সময়ে স্তন ক্যানসারে রূপ নেয়। এতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৯৮ শতাংশ নারী। আর বয়সভিত্তিক নারী হচ্ছেন, যাঁদের মাসিক তাড়াতাড়ি শুরু হয়, একই সঙ্গে চল্লিশোর্ধ্ব বা যাঁরা মদ্যপান করেন এবং যাঁরা বেশি স্থূলকায়। এ ছাড়া বংশগতভাবে কারও এ ধরনের ক্যানসার হতে পারে।
ডা. রোকাইয়া আরও বলেন, ঝুঁকিতে থাকা বা না থাকা নারীরা এ স্ক্রিনিং করবেন দুইভাবে। মেয়েদের মাসিক শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে স্ক্রিনিংটা করবেন। কারণ, তখন স্তনের টিস্যুগুলো রিলাক্স থাকে। পদ্ধতি হচ্ছে, নিজেই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে স্তনে দেখবেন কোনো ধরনের চাকা বা পরিবর্তন রয়েছে কি না? যদি কোনো উপসর্গ পান, সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। এটাকে বলে সেলফ স্ক্রিনিং। আর আলট্রাসনোগ্রাম, ব্রেস্ট মনোগ্রাম এবং এমআরআই—এ তিনভাবে চিকিৎসক ক্লিনিক্যাল ব্রেস্ট স্ক্রিনিং করবেন। এ ছাড়া ম্যামোগ্রাফি, এফএনএসি পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হবেন নারী ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন কি না। সেলফ স্ক্রিনিংয়ের ক্ষেত্রে নারী প্রতি মাসে নিজের স্তন নিজেই পরীক্ষা করবেন। সেই সঙ্গে ২০ থেকে ৩৯ বছর বয়স পর্যন্ত তিন বছর অন্তর, ৪০ বছর বয়স থেকে দুই বছর পরপর এবং ৫০ বছর বয়স থেকে এক বছর পরপর চিকিৎসকের