ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির মরদেহ ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এর আগে জানাজার সময় দুপুর আড়াইটায় নির্ধারিত হলেও পরবর্তীতে তা পরিবর্তন করে দুপুর ২টায় নির্ধারণ করা হয়।
প্রেস উইংয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কোনো ধরনের ব্যাগ, ভারী বস্তু বা সন্দেহজনক সামগ্রী বহন না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হচ্ছে। একই সঙ্গে সংসদ ভবন ও এর আশপাশের এলাকায় ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে শহীদ ওসমান হাদির কফিন বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে তার কফিনের পাশে নীরবে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
শ্রদ্ধা নিবেদনকারীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ, ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েমসহ ইনকিলাব মঞ্চের শীর্ষ নেতারা।
বিমানবন্দর থেকে শহীদ হাদির মরদেহ জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে নেওয়া হয়। শুক্রবার রাত পৌনে ৭টার দিকে সেখানে পৌঁছানোর পর হাসপাতালের হিমঘরে তার মরদেহ সংরক্ষণ করা হয়।
ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শহীদ ওসমান হাদিকে কবি কাজী নজরুল ইসলামের পাশে সমাহিত করা হবে। একই কারণে পূর্বঘোষিত সময়সূচিতে পরিবর্তন এনে জানাজা ও কর্মসূচি পুনর্র্নিধারণ করা হয়েছে।
সংগঠনটি আরও জানায়, ছাত্র-জনতাকে শৃঙ্খলার সঙ্গে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে কোনো অপশক্তি অনুপ্রবেশ করে সহিংসতা সৃষ্টি করতে না পারে। নিরাপত্তাজনিত কারণে মরদেহ দেখার সুযোগ রাখা হচ্ছে না বলেও জানানো হয়।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন শরিফ ওসমান হাদি। তার মৃত্যুর খবর দেশে পৌঁছানোর পর রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগ চলাকালে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে মাথায় গুরুতর আহত হন তিনি। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছিল।









