ওমরাহ পালনে বড় পরিবর্তন এনেছে সৌদি আরব সরকার। হজ ও ওমরাহ কার্যক্রম আরও সুশৃঙ্খল এবং নিরাপদ করতে বেশ কিছু নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সৌদি সরকারের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে ভিসা আবেদন, হোটেল বুকিং এবং পরিবহন ব্যবস্থা সবকিছুই সরকারি প্ল্যাটফর্ম ‘নুসুক’ বা ‘মাসার’ এর মাধ্যমে করতে হবে। সেই সঙ্গে বিদেশি নাগরিকদের জন্য নতুন ১০টি শর্ত মানা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
নতুন নিয়মে যেসব বিষয় মানতে হবে:
১. ভিসার সময়ই হোটেল বুকিং: ওমরাহ ভিসার আবেদন করার সময়ই অনুমোদিত হোটেল বুকিং করতে হবে, যা ‘নুসুক’ বা ‘মাসার’ সিস্টেমের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে।
২. আত্মীয়ের বাসায় থাকলে লাগবে সৌদি আইডি: যদি কেউ আত্মীয়ের বাসায় থাকেন, তাহলে হোস্টের ইউনিফাইড সৌদি আইডি ভিসার সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। সফরের সময় পরিবর্তন হলেও সেই তথ্য হালনাগাদ করতে হবে।
৩. পর্যটক ভিসায় ওমরাহ নিষিদ্ধ: পর্যটক ভিসাধারীরা ওমরাহ পালন করতে পারবেন না। নিয়ম ভাঙলে সৌদি কর্তৃপক্ষ যাত্রীকে থামিয়ে দিতে পারে। মদিনার রিয়াজুল জান্নাত প্রবেশও এই ভিসায় নিষিদ্ধ।
৪. আলাদা ওমরাহ ভিসা বাধ্যতামূলক: ওমরাহ পালনের জন্য ‘নুসুক’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ওমরাহ ভিসা নিতে হবে। এটি ই-ভিসা আকারে বা অনুমোদিত ট্যুর অপারেটরের মাধ্যমে প্যাকেজ বুকিং করে নেওয়া যাবে।
৫. সফরসূচি পরিবর্তনযোগ্য নয়: ভিসার সঙ্গে জমা দেওয়া সফরসূচি আর পরিবর্তন বা বাতিল করা যাবে না। নির্ধারিত সময়ের বেশি অবস্থান করলে গুণতে হবে জরিমানা।
৬. নির্দিষ্ট কিছু দেশের জন্য ভিসা অন অ্যারাইভাল: যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও শেনজেন ভিসাধারীরা নির্দিষ্ট শর্তে অন অ্যারাইভাল ভিসা পাবেন। তবে পূর্বে এসব দেশে কমপক্ষে একবার ভ্রমণ করতে হবে এবং ভিসার মেয়াদ হতে হবে এক বছর।
৭. বিমানবন্দরে বুকিং যাচাই: সৌদি আরব পৌঁছানোর পর বিমানবন্দরে নুসুক বা মাসার সিস্টেমে হোটেল ও পরিবহনের বুকিং যাচাই করা হবে। তথ্য না মেললে ভ্রমণে বাধা দেওয়া হতে পারে বা জরিমানা গুনতে হতে পারে।
৮. অনুমোদিত ট্যাক্সি ও পরিবহন বাধ্যতামূলক: পথচারী বা অগণন ট্যাক্সি ব্যবহার নিষিদ্ধ। কেবলমাত্র ‘নুসুক’ অ্যাপ থেকে অনুমোদিত ট্যাক্সি, বাস বা ট্রেন বুকিং করতে হবে।
৯. হারামাইন ট্রেনের সময় সীমিত: হারামাইন এক্সপ্রেস ট্রেন রাত ৯টার পর চলাচল করে না। তাই এ সময়ের পর আসা যাত্রীদের বিকল্প পরিবহন আগে থেকেই বুকিং করতে হবে।
১০. নিয়ম ভাঙলে কড়া জরিমানা: নতুন নিয়মের কোনোটি লঙ্ঘন করলে হজযাত্রী বা এজেন্ট—দুজনকেই বড় অঙ্কের জরিমানার মুখে পড়তে হতে পারে।
সৌদি সরকার মনে করছে, এসব নিয়ম কার্যকর হলে বিদেশি ওমরাহযাত্রীদের যাত্রা হবে আরও নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও নির্বিঘ্ন।