4:31 pm, Thursday, 9 October 2025

ইরানের ওপর ফের জাতিসংঘের কঠোর নিষেধাজ্ঞা

ইরানের ওপর ফের জাতিসংঘের কঠোর নিষেধাজ্ঞা। ছবি: সংগৃহীত

Monzu-Info-Tech
Monzu-Info-Tech

পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মুখে ইরানের ওপর ফের কঠোর অর্থনৈতিক ও সামরিক নিষেধাজ্ঞা জারি করলো জাতিসংঘ। এক দশক আগে আন্তর্জাতিক সমঝোতায় প্রত্যাহার করা নিষেধাজ্ঞাগুলো এবার আবার কার্যকর হলো।

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি-এর খবরে বলা হয়, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি দ্রুত সম্প্রসারণের অভিযোগে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি ‘স্ন্যাপব্যাক’ নামের একটি বিশেষ ব্যবস্থা সক্রিয় করেছে, যার ফলে পুরোনো নিষেধাজ্ঞাগুলো আবার চালু হয়।

এর আগে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ বিমান হামলার জেরে তেহরান তার পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে আন্তর্জাতিক পরিদর্শন স্থগিত করে। যদিও ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান দাবি করেছেন, তাদের কর্মসূচি একান্তই শান্তিপূর্ণ এবং দেশটির পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো পরিকল্পনা নেই।

তিনি নতুন নিষেধাজ্ঞাকে আখ্যা দিয়েছেন “অন্যায়, অবিচার ও সম্পূর্ণ অবৈধ” হিসেবে।

২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) অনুযায়ী, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও গবেষণা কার্যক্রম সীমিত রাখা হয়েছিল। তবে ২০১৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে ওই চুক্তি থেকে একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে আবারও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

সম্প্রতি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর ইরান অভিযোগ করে, আন্তর্জাতিক সমর্থন কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। যদিও ইউরোপীয় দেশগুলো আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফাঁকে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের আলোচনায় কোনো সমাধান আসেনি। বরং ইউরোপীয় পক্ষ অভিযোগ করেছে, ইরান আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা করেনি এবং উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের তথ্য গোপন করেছে।

ইরান দাবি করেছে, এই নিষেধাজ্ঞা অযৌক্তিক ও অবৈধ এবং জনগণের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হলে তারা উপযুক্ত জবাব দেবে। প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, “নতুন নিষেধাজ্ঞা আলোচনার পথ বন্ধ করে দিচ্ছে।”

যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব ছিল, ইরান যেন তার ইউরেনিয়ামের মজুত হস্তান্তর করে, বিনিময়ে তিন মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হবে। কিন্তু ইরান এ প্রস্তাবকে ‘ফাঁদ’ হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

ইসরায়েল এ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, “এটা সময়োচিত ও জরুরি পদক্ষেপ। ইরানকে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হওয়া থেকে যেকোনো মূল্যে রোধ করতে হবে।”

Write Your Comment

About Author Information

Bangladesh Diplomat

Popular Post

ইরানের ওপর ফের জাতিসংঘের কঠোর নিষেধাজ্ঞা

Update Time : 01:20:33 pm, Monday, 29 September 2025

পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মুখে ইরানের ওপর ফের কঠোর অর্থনৈতিক ও সামরিক নিষেধাজ্ঞা জারি করলো জাতিসংঘ। এক দশক আগে আন্তর্জাতিক সমঝোতায় প্রত্যাহার করা নিষেধাজ্ঞাগুলো এবার আবার কার্যকর হলো।

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি-এর খবরে বলা হয়, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি দ্রুত সম্প্রসারণের অভিযোগে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি ‘স্ন্যাপব্যাক’ নামের একটি বিশেষ ব্যবস্থা সক্রিয় করেছে, যার ফলে পুরোনো নিষেধাজ্ঞাগুলো আবার চালু হয়।

এর আগে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ বিমান হামলার জেরে তেহরান তার পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে আন্তর্জাতিক পরিদর্শন স্থগিত করে। যদিও ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান দাবি করেছেন, তাদের কর্মসূচি একান্তই শান্তিপূর্ণ এবং দেশটির পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো পরিকল্পনা নেই।

তিনি নতুন নিষেধাজ্ঞাকে আখ্যা দিয়েছেন “অন্যায়, অবিচার ও সম্পূর্ণ অবৈধ” হিসেবে।

২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) অনুযায়ী, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও গবেষণা কার্যক্রম সীমিত রাখা হয়েছিল। তবে ২০১৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে ওই চুক্তি থেকে একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে আবারও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

সম্প্রতি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর ইরান অভিযোগ করে, আন্তর্জাতিক সমর্থন কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। যদিও ইউরোপীয় দেশগুলো আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফাঁকে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের আলোচনায় কোনো সমাধান আসেনি। বরং ইউরোপীয় পক্ষ অভিযোগ করেছে, ইরান আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা করেনি এবং উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের তথ্য গোপন করেছে।

ইরান দাবি করেছে, এই নিষেধাজ্ঞা অযৌক্তিক ও অবৈধ এবং জনগণের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হলে তারা উপযুক্ত জবাব দেবে। প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, “নতুন নিষেধাজ্ঞা আলোচনার পথ বন্ধ করে দিচ্ছে।”

যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব ছিল, ইরান যেন তার ইউরেনিয়ামের মজুত হস্তান্তর করে, বিনিময়ে তিন মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হবে। কিন্তু ইরান এ প্রস্তাবকে ‘ফাঁদ’ হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

ইসরায়েল এ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, “এটা সময়োচিত ও জরুরি পদক্ষেপ। ইরানকে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হওয়া থেকে যেকোনো মূল্যে রোধ করতে হবে।”