3:56 am, Monday, 21 October 2024

আন্দোলনের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের

  • Zuel Rana
  • Update Time : 11:05:24 pm, Sunday, 20 October 2024
  • 18

অটোপাস দাবি, ছবিঃ সংগৃহীত

Monzu-Info-Tech
Monzu-Info-Tech
আন্দোলনের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের

উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার ফল বাতিলের দাবিতে ফেল করা একদল শিক্ষার্থীর আন্দোলনের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।

রোববার (২০ অক্টোবর) রাতে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে তপন কুমার সরকার বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমার পদত্যাগ চেয়েছেন। আমি পদত্যাগ করলে যদি তারা আন্দোলন স্থগিত করে তাহলে আমি পদত্যাগই করব। আগামীকাল আমার পদত্যাগপত্র জমা দেব।’

এদিকে, রাত ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ফেল করা শিক্ষার্থীরা ঢাকা বোর্ডের ভেতরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। দাবি আদায়ের না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।

এর আগে রাত সাড়ে ৭টার দিকে বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার নিচে এসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সামনে সরকার তথা ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অবস্থান তুলে ধরেন।

শিক্ষার্থীদের আজকের মতো বাসায় চলে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তখন তিনি বলেন, ‘আপনারা আন্দোলন করছেন, দাবি জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সরকার আলোচনা করে ব্যবস্থা নেবেন। আপনাদের ওপর আজকে যারা এখানে হামলা চালিয়েছেন বা মারধর করেছেন, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

তবে বোর্ড চেয়ারম্যানের বক্তব্য শেষ না হতেই ‘ভুয়া, ভুয়া’ এবং ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ স্লোগান দিতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি রাতেই ফল বাতিলের ঘোষণা দিতে হবে। সবাইকে অটোপাস দিতে হবে। তা না হলে তারা সেখান থেকে বের হবেন না।

এর আগে সকাল ১১টার দিকে মিছিল নিয়ে শিক্ষা বোর্ডের সামনে জড়ো হয় এইচএসসিতে ফেল করা শিক্ষার্থীরা। পরে তারা বোর্ডের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। তারা বলছেন, বিক্ষোভ চলাকালে তাদের ওপর হামলা হয়েছে। হামলায় কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, কিছু শিক্ষার্থী ভবনের ভেতরে ঢুকে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কক্ষেও ভাঙচুর চালিয়েছেন।

এ বছরের এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ৩০ জুন। সাতটি পরীক্ষা হওয়ার পর সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে কয়েক দফায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তখন পর্যন্ত ছয়টি বিষয়ের পরীক্ষা বাকি ছিল। বাকি ছিল ব্যবহারিক পরীক্ষাও। একপর্যায়ে স্থগিত পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে গত ২০ আগস্ট সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে বিক্ষোভ করেন পরীক্ষার্থীরা। তখন স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে বাধ্য হয় শিক্ষা বিভাগ।

১৫ অক্টোবর এইচএসসি-সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। স্থগিত হওয়া বিষয়গুলোর পরীক্ষা আন্দোলনের মুখে বাতিলের কারণে এবার এইচএসসি পরীক্ষার মূল্যায়ন হয়েছে ভিন্ন পদ্ধতিতে। বাতিল হওয়া পরীক্ষাগুলোর মূল্যায়ন হয়েছে পরীক্ষার্থীদের এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে (বিষয় ম্যাপিং)। অর্থাৎ এসএসসিতে যে শিক্ষার্থী যত নম্বর পেয়েছিলেন, সেটা এইচএসসিতে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। আর এইচএসসিতে যে বিষয়গুলোর পরীক্ষা হয়েছিল, সেগুলোর উত্তরপত্রের ভিত্তিতে মূল্যায়ন হয়েছে। এ দুই মূল্যায়ন মিলে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল তৈরি করা হয়েছে।

Write Your Comment

About Author Information

Zuel Rana

আন্দোলনের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের

Update Time : 11:05:24 pm, Sunday, 20 October 2024
আন্দোলনের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের

উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার ফল বাতিলের দাবিতে ফেল করা একদল শিক্ষার্থীর আন্দোলনের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।

রোববার (২০ অক্টোবর) রাতে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে তপন কুমার সরকার বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমার পদত্যাগ চেয়েছেন। আমি পদত্যাগ করলে যদি তারা আন্দোলন স্থগিত করে তাহলে আমি পদত্যাগই করব। আগামীকাল আমার পদত্যাগপত্র জমা দেব।’

এদিকে, রাত ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ফেল করা শিক্ষার্থীরা ঢাকা বোর্ডের ভেতরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। দাবি আদায়ের না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।

এর আগে রাত সাড়ে ৭টার দিকে বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার নিচে এসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সামনে সরকার তথা ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অবস্থান তুলে ধরেন।

শিক্ষার্থীদের আজকের মতো বাসায় চলে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তখন তিনি বলেন, ‘আপনারা আন্দোলন করছেন, দাবি জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সরকার আলোচনা করে ব্যবস্থা নেবেন। আপনাদের ওপর আজকে যারা এখানে হামলা চালিয়েছেন বা মারধর করেছেন, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

তবে বোর্ড চেয়ারম্যানের বক্তব্য শেষ না হতেই ‘ভুয়া, ভুয়া’ এবং ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ স্লোগান দিতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি রাতেই ফল বাতিলের ঘোষণা দিতে হবে। সবাইকে অটোপাস দিতে হবে। তা না হলে তারা সেখান থেকে বের হবেন না।

এর আগে সকাল ১১টার দিকে মিছিল নিয়ে শিক্ষা বোর্ডের সামনে জড়ো হয় এইচএসসিতে ফেল করা শিক্ষার্থীরা। পরে তারা বোর্ডের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। তারা বলছেন, বিক্ষোভ চলাকালে তাদের ওপর হামলা হয়েছে। হামলায় কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, কিছু শিক্ষার্থী ভবনের ভেতরে ঢুকে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কক্ষেও ভাঙচুর চালিয়েছেন।

এ বছরের এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ৩০ জুন। সাতটি পরীক্ষা হওয়ার পর সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে কয়েক দফায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তখন পর্যন্ত ছয়টি বিষয়ের পরীক্ষা বাকি ছিল। বাকি ছিল ব্যবহারিক পরীক্ষাও। একপর্যায়ে স্থগিত পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে গত ২০ আগস্ট সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে বিক্ষোভ করেন পরীক্ষার্থীরা। তখন স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে বাধ্য হয় শিক্ষা বিভাগ।

১৫ অক্টোবর এইচএসসি-সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। স্থগিত হওয়া বিষয়গুলোর পরীক্ষা আন্দোলনের মুখে বাতিলের কারণে এবার এইচএসসি পরীক্ষার মূল্যায়ন হয়েছে ভিন্ন পদ্ধতিতে। বাতিল হওয়া পরীক্ষাগুলোর মূল্যায়ন হয়েছে পরীক্ষার্থীদের এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে (বিষয় ম্যাপিং)। অর্থাৎ এসএসসিতে যে শিক্ষার্থী যত নম্বর পেয়েছিলেন, সেটা এইচএসসিতে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। আর এইচএসসিতে যে বিষয়গুলোর পরীক্ষা হয়েছিল, সেগুলোর উত্তরপত্রের ভিত্তিতে মূল্যায়ন হয়েছে। এ দুই মূল্যায়ন মিলে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল তৈরি করা হয়েছে।